চীনে হিন্দু জনসংখ্যা কত ২০২৪ সালে – সকলের জানা উচিত।

Written by Bikrom Das

Published on:

হিন্দু ধর্ম বর্তমানে চীনের সংখ্যালঘু ধর্মগুলোর একটি, যা প্রায় ১.৩ মিলিয়ন মানুষ অনুসরণ করে। যদিও আধুনিক চীনে হিন্দু ধর্মের উপস্থিতি সীমিত, তবে এটি চীনের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রাচীন চীনে হিন্দু ধর্মের প্রভাব ছিল অনেক ব্যাপক এবং এটির প্রভাব চীনা সমাজ, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় চিন্তাভাবনায় স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। চীনে হিন্দু ধর্মের আগমন এবং তার প্রভাবের ইতিহাস বেশ পুরনো। এটি প্রায় দুই হাজার বছর আগের কথা, যখন ভারতের বৈদিক ধর্মের কিছু অংশ চীনে প্রবেশ করতে শুরু করে। প্রাচীন চীনে, বিশেষ করে মধ্যযুগে, হিন্দু ধর্মের প্রভাব ছিল অনেক গভীর। বিভিন্ন ঐতিহাসিক সাক্ষ্য এবং প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে জানা যায়, হিন্দু ধর্মের অনুশীলনগুলো চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্তৃত ছিল।

চীনে হিন্দু জনসংখ্যা কত ২০২৪ সালে

প্রত্নতাত্ত্বিক খননগুলোতে পাওয়া গেছে, চীনের কিছু প্রদেশে হিন্দু ধর্মের উপস্থিতি ছিল। চীনা প্রদেশগুলোতে শ্রী লক্ষ্মী, গণেশ, শিব এবং অন্যান্য হিন্দু দেবতার মূর্তি পাওয়া গেছে, যা এ ধর্মের ইতিহাসের প্রমাণ সরবরাহ করে। এগুলো দেখায় যে, প্রাচীন চীনে হিন্দু ধর্মের প্রভাব অনেক পুরানো এবং এর সাথে সম্পর্কিত বহু ঐতিহ্য চীনা সমাজে প্রভাব ফেলেছে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

চীনে বৌদ্ধ ধর্মের উত্থান ও বিকাশের সময় হিন্দু ধর্মের কিছু অনুশীলন এবং ধারণা বৌদ্ধধর্মের মধ্যে মিশে গিয়েছিল। ভারতের বৌদ্ধধর্ম যখন চীনে প্রবেশ করে, তখন সেটি হিন্দু ধর্মের কিছু প্রভাব গ্রহণ করে। এর মধ্যে অন্যতম হলো যোগ এবং ধ্যানের অনুশীলন, যা পরে বৌদ্ধধর্মের অংশ হয়ে ওঠে। চীনে বৌদ্ধধর্মের জনপ্রিয়তার সাথে সাথে হিন্দু ধর্মের কিছু দার্শনিক ধারণা এবং আচার-অনুষ্ঠান বৌদ্ধধর্মের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং তা চীনা সমাজে বিস্তৃত হয়।

হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন দার্শনিক চিন্তাভাবনা যেমন, জীবন, মৃত্যু, পুনর্জন্ম এবং ক্রমাগত আত্মার উন্নতি বৌদ্ধধর্মে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে। এইসব চিন্তাভাবনা চীনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল এবং এর মধ্যে ধ্যান এবং যোগের অনুশীলনগুলো বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন:  জন্মাষ্টমী ২০২৪ সময়সূচি বাংলা তারিখ, জেনে নিন জন্মাষ্টমী কবে
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

আধুনিক চীনে হিন্দু ধর্ম

আজকের দিনে চীনে হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা কম, তবে কিছু হিন্দু মন্দির এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান চীনের বিভিন্ন শহরে রয়েছে। চীনে হিন্দু ধর্মের পেছনে একেবারে পুরনো ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও, আধুনিক যুগে এর উপস্থিতি সীমিত। তবে হিন্দু ধর্মের কিছু বিশেষ ধারণা যেমন, যোগ এবং ধ্যান, চীনা সমাজে এখনও ব্যাপকভাবে প্রচলিত।

চীনে হিন্দু ধর্মের সীমিত অনুসরণকারীদের মধ্যে বিশেষভাবে কিছু ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং অভিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন, যারা হিন্দু ধর্ম পালন করে। চীনে হিন্দু ধর্মের মূল অনুশীলনগুলোর মধ্যে যোগ, ধ্যান, এবং প্রার্থনা অন্তর্ভুক্ত।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

যোগ এবং ধ্যানের চীনা প্রভাব

হিন্দু ধর্মের ঐতিহ্যবাহী অনুশীলন যেমন যোগ এবং ধ্যান, চীনে প্রচলিত হয়েছে এবং তা চীনা সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। চীনা সমাজে ধ্যানের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যা শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। যোগের অনুশীলন চীনে ‘চীনা যোগ’ বা ‘তাওবাদী যোগ’ নামে পরিচিত, যা মূলত হিন্দু ধর্মের যোগের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। চীনে যোগ এবং ধ্যানের অনুশীলন শুরু হয়েছিল বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাবের কারণে, কিন্তু এর পরবর্তীকালে চীনা সমাজে এই অনুশীলনগুলির জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। চীনের অনেক মানুষ এখন মানসিক শান্তি এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য ধ্যান এবং যোগ অনুশীলন করেন। চীনে হিন্দু ধর্মের প্রভাব বেশ পুরনো এবং গভীর। যদিও চীনের প্রধান ধর্ম বৌদ্ধধর্ম, তাওবাদ এবং ইসলাম, সেখানে হিন্দু দেবতাদের পূজা এবং সম্মানও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনের বেশ কিছু অঞ্চলে শিব, বিষ্ণু, গণেশ এবং কালী—এই চারটি দেবতা বিশেষভাবে পূজিত হয়। এখানে আমরা চীনে হিন্দু ধর্মের প্রভাব এবং পূজিত দেবতাদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

চীনে হিন্দু ধর্মের প্রভাব অনেক পুরনো। মধ্যযুগে বিশেষ করে দক্ষিণ চীনের কিছু অংশে হিন্দু সম্প্রদায় প্রচুর সমৃদ্ধি লাভ করেছিল। তামিল বণিকরা চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবসা করতে এসে হিন্দু ধর্ম এবং তার সংস্কৃতির প্রচার করেছিল। এই সময়েই শিব, বিষ্ণু, গণেশ এবং কালী দেবতাদের পূজা শুরু হয়।

Telegram Group Join Now

চীনে হিন্দু দেবতাদের পূজা

চীনে হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বেশি পূজিত দেবতা হচ্ছেন শিব, বিষ্ণু, গণেশ এবং কালী। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং পূজা বিশেষত দক্ষিণ চীনের ফুজিয়ান প্রদেশে দেখা যায়। এখানে হিন্দু মন্দির এবং দেবতার মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে, যা চীনে হিন্দু ধর্মের দীর্ঘ ঐতিহ্য এবং প্রভাবের প্রমাণ।

শিব

শিব চীনে অত্যন্ত পূজিত একটি দেবতা। চীনে তার পূজা অনেক পুরনো এবং শিবের মূর্তি ও চিহ্ন বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া গেছে। বিশেষভাবে দক্ষিণ-পূর্ব চীনের কোয়ানঝো এবং কাইয়ুয়ান মন্দিরে শিবের মূর্তি পাওয়া গেছে। শিবের মূর্তি সাধারনত তার ত্রিশূল, সাপ এবং নন্দী বাছুরের সাথে চিত্রিত থাকে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বিষ্ণু

বিষ্ণু চীনে বিশেষভাবে পূজিত একজন দেবতা। তার নাম শ্রী বিষ্ণু এবং তিনি হিন্দু ধর্মের ত্রিতীয় দেবতা। চীনে বিষ্ণুর পূজা সাড়ে কয়েকশত বছর ধরে চলে আসছে। ফুজিয়ান প্রদেশে বিষ্ণুর মূর্তি পাওয়া গেছে এবং বহু চীনা লোক তাকে আশীর্বাদ লাভের জন্য পূজা করে।

গণেশ

গণেশ, যাকে ‘বিঘ্ননাশক’ও বলা হয়, চীনে অত্যন্ত জনপ্রিয় দেবতা। গণেশের মূর্তি চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায় এবং বিশেষত ব্যবসায়ী সম্প্রদায় তাকে খুব শ্রদ্ধা করে। গণেশের মূর্তি সাধারণত তার হাতিতে চিত্রিত হয় এবং তার মাথা বাচ্চাদের মতো দেখায়। তাকে বিশেষ করে কাজের সফলতা এবং বিঘ্ন দূরীকরণের জন্য পূজা করা হয়।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

কালী

কালী চীনে হিন্দু ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেবী। তাকে বিশেষভাবে শত্রু দমন এবং দুর্দশা দূর করার দেবী হিসেবে পূজা করা হয়। কালী মূর্তির মধ্যে সাধারণত তার ত্রিশূল, ক্ষুধার্ত চেহারা এবং তার অগ্নিমুখী দৃষ্টি দেখা যায়। চীনের কিছু অঞ্চলে কালী পূজার্চনা চলছে।

চীনের কমিউনিস্ট সরকার পাঁচটি প্রধান ধর্মের বিশ্বাসকে অনুমোদন দিয়েছে। এই ধর্মগুলি হলো চাইনিজ বৌদ্ধধর্ম, তাওবাদ, ইসলাম, ক্যাথলিক ধর্ম এবং প্রোটেস্ট্যান্টিজম। চীনের সরকার এই ধর্মগুলির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এবং এগুলিকে সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে, হিন্দু ধর্মের পূজা এবং বিশ্বাস চীনে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের অনুমোদন পায়নি, তবুও চীনের কিছু অঞ্চলে হিন্দু ধর্মের চর্চা এখনও চলে আসছে।

আরও পড়ুন:  আপনি কী জানেন অক্ষয় তৃতীয়া কি এবং কেন, অক্ষয় তৃতীয়ার মাহাত্ম্য কি? জেনে নিন তাহলে
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

চীনে হিন্দু ধর্মের ইতিহাস

চীনে হিন্দু ধর্মের আগমন সম্ভবত তামিল বণিকদের মাধ্যমে। তারা মধ্যযুগে দক্ষিণ চীনে ব্যবসার জন্য আসত এবং তাদের সঙ্গে হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস ও মন্দিরের সংস্কৃতি নিয়ে আসত। চীনে হিন্দু ধর্মের প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় ফুজিয়ান প্রদেশের কোয়ানঝো এবং কাইয়ুয়ান মন্দিরে। এখানে শিবের মূর্তি এবং অন্যান্য হিন্দু প্রতীক আবিষ্কৃত হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে হিন্দু ধর্ম চীনে একসময় বেশ জনপ্রিয় ছিল।

চীনে হিন্দু মন্দিরের সংখ্যা বেশ কম, তবে কিছু ঐতিহাসিক মন্দির রয়েছে যেখানে হিন্দু দেবতাদের পূজা হয়। কাইয়ুয়ান মন্দির একটি প্রধান হিন্দু মন্দির হিসেবে পরিচিত। এই মন্দিরটি চীনে হিন্দু ধর্মের প্রাচীন ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় চর্চার অন্যতম নিদর্শন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

শেষ কথা

চীনে হিন্দু ধর্ম এবং তার দেবতাদের পূজা একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। যদিও চীনে প্রধান ধর্মগুলি হল বৌদ্ধধর্ম, তাওবাদ এবং ইসলাম, তবুও হিন্দু দেবতাদের পূজা দক্ষিণ চীনের কিছু অঞ্চলে প্রচলিত রয়েছে। বিশেষ করে শিব, বিষ্ণু, গণেশ এবং কালী—এই চার দেবতা চীনে পূজিত হন এবং তাদের মূর্তি এবং মন্দিরের প্রমাণ পাওয়া গেছে। চীনে হিন্দু ধর্মের ইতিহাস এবং এর প্রভাব চীন-ভারত সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনে হিন্দু ধর্মের ইতিহাস এবং প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যদিও আধুনিক সময়ে এটি কিছুটা সীমিত হয়ে গেছে। প্রাচীন চীনে হিন্দু ধর্মের উপস্থিতি এবং এর সাথে সম্পর্কিত সংস্কৃতি এবং চিন্তাভাবনা চীনা সমাজে গভীর প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে যোগ এবং ধ্যানের অনুশীলন চীনে এখনও ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। সুতরাং, হিন্দু ধর্মের প্রভাব চীনের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক জীবনে অস্বীকারযোগ্য। সনাতন ধর্ম সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের মূলপাতা ভিজিট করে অন্যান্য তথ্য পড়ুন।

DISCLAIMER

এই আর্টিকেলে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বিশ্বস্ত মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য যে আমরা সমস্ত নির্ভুল তথ্য দিয়েছি। কোনো প্রতিক্রিয়া বা অভিযোগের জন্য [email protected] মেইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপJoin Us
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলJoin Us
আমাদের ফেসবুক পেজFollow Us
আমাদের কোরা পেজFollow Us
গু নিউজে ফলো করুনFollow Us
Bikrom Das

আমি বহু-বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছি। আমি বাজার দর, রোজগার, অটোমোবাইল, টেলিকম, টেকনোলজি, জীবনধারা, ধর্ম এবং জাতি নিয়ে গভীর অন্তর্দৃষ্টি নিয়ে লেখালেখি করে থাকি। আমার লেখাগুলো তথ্যবহুল, পাঠকের কাছে সহজবোধ্য এবং সমসাময়িক। Whatsupbd.com-এ আমার আর্টিকেলগুলো পাঠকদের সঠিক তথ্য সরবরাহ করার পাশাপাশি জীবনের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় দিকগুলোতে আলোকপাত করে। নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি এবং বাজার বিশ্লেষণে আমার লেখা পঠনযোগ্যতা বাড়ায়। আমার (Bikrom Das) লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি পাঠকগোষ্ঠী তৈরি করা, যারা আমার তথ্যসমৃদ্ধ ও নির্ভুল কনটেন্ট থেকে উপকৃত হবে।

রিলেটেড পোষ্ট

Janhvi Kapoor Latest Photo: Valentine’s Day তে যে পোশাক পড়লেন Oneplus Nord ce 3 lite 5g price in Bangladesh Mobiledokan The Kerala Story OTT Watch Online – ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কীবোর্ডে স্পেসবার সবচেয়ে বড় কেন? আসল কারন জেনে নিন। আমি আমার এসএসসি রেজাল্ট কিভাবে দেখব, সহজ নিয়ম কী?