দূর্গা পূজার সময়সূচী কী – তা জানুন, দুর্গাপূজা কবে

Written by WhatsUpBD Desk

Published on:

এই লেখাটি থেকে আপনি দূর্গা পূজার সময়সূচী ২০২৫, দুর্গা পূজা কবে, দূর্গা পূজা কত তারিখ, পূজা কত তারিখে, এই বছরের দূর্গা পূজার সময়সূচী ইত্যাদি বিষয়ে নিচের তালিকা থেকে জানতে পারবেন।

দুর্গা পূজা (Durga puja) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব, যা প্রতি বছর মহাসমারোহে উদযাপিত হয়। ২০২৫ সালের দুর্গা পূজা শুরু হবে ৯ অক্টোবর। দুর্গা পূজার এই সময়গুলোতে বিশেষ আচার-অনুষ্ঠান এবং আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে উদযাপন করে।

দূর্গা পূজার সময়সূচী একনজরে দেখেনিন

তিথীদিনতারিখ
মহাষষ্ঠীবুধবার০৯ অক্টোবর
মহাসপ্তমীবৃহস্পতিবার১০ অক্টোবর
মহাষ্টমীশুক্রবার১১ অক্টোবর
মহানবমীশনিবার১২ অক্টোবর
বিজয়া দশমীরবিবার১৩ অক্টোবর
এই বছরের দূর্গা পূজার সময়সূচী

বাঙালী হিন্দুদের সবথেকে বড় পবিত্র ধর্মীয় উৎসব হল দূর্গাপূজা। যা বছরের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। অনেক মানুষ এই দুর্গাপূজার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে, অনেকেই জানেন না দুর্গাপূজার সময়সূচী বা কখন দুর্গাপূজা হবে। তাই অনুগ্রহ করে উপরে দেওয়া সময়সূচী চেক করুন। মহাষষ্ঠী থেকে শুরু করে বিজয়া দশমী পর্যন্ত তারিখের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে।

দুর্গার কাহিনী

বাঙালী সনাতনীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে দূর্গাপূজা। অনেক শিক্ষিত বাঙালী সনাতনীরা নিজেদের ইতিহাস এবং নিজ জাতির দেবী দুর্গার ইতিহাস জানেন না।এই লেখাটি লিখেছেন ”বিক্রম দাস”। আমরা আশাকরি তার এই লেখাটি হয়ত আপনাদের জ্ঞানার্জনে সহায়তা করবে।

কলকাতা অলি-গলিতে সজ্জিত মন্ডপে আপনারা উলুধ্বনির আওয়াজ অবশ্যই শুনে থাকবেন। এছাড়া বাংলাদেশেও প্রতিটি সনাতন ধর্মালম্বীর ঘরে ঘরে এই উলুধ্বনি শুনে থাকবেন। এই শব্দকে উলুধ্বনি বলে থাকে। ভিডিওতে দেওয়া আছে দেখে নিন।

যেখানে নারীরা পূজার সময় কিম্বা শুভ কাজের শুরুতে এই উলুধ্বনী শব্দ করে চারদিকের নেগেটিভ এনার্জি ধ্বংস করে থাকে। মহলকে আরও অনেক শুভকর বানিয়ে তোলে। বড় বড় মন্ডব সাজানো হয়, শহরকে খুব সুন্দর করে সজ্জিত করা হয়।

আরও পড়ুন:  অল্প পুজিতে নতুন কিছু লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া

নারীরা সাদা এবং লাল শাড়ি পড়ে একজন আরেকজনকে সিদুর লাগায়। মানুষের মধ্যে এক আলাদা রকমের উৎসবের তৈরি হয়। এটি এমন উৎসব যাতে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ঘরেই বিরিয়ানি, মাটন কারি, ফিশফ্রাই এর মত খাবার বানানো হয়ে থাকে। এটি এমন এক উৎসব যেখানে সকল দিকে সকল মানুষের মাঝে হাসি-উল্লাস,অনুষ্ঠান এবং দূর্গামায়ের জয়জয়কার হয়ে থাকে। এটি এমন এক ধর্মীয় উৎসব যা আনন্দের সাথে সারাদেশে পালন করা হয় দূর্গাপূজা।

এই ভিডিওটি এই তথ্যগুলি বুঝতে আপনাকে সহায়তা করবে

দেবী দুর্গার আবির্ভাব এর সংক্ষিপ্ত তথ্য

ভূমিকা:

এই লেখাটি রামায়ণে দেবী দুর্গার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরে। রাবণ বধের জন্য রাম কিভাবে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন এবং তাঁর আশীর্বাদ লাভ করেছিলেন, তা এই লেখায় বর্ণিত হয়েছে।

দেবী দুর্গার আরাধনা:

  • রাম রাবণের সাথে যুদ্ধের পূর্বে চারদিন ধরে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন।
  • ১০৮ টি নীল পদ্ম ফুল দিয়ে পূজা করার প্রয়োজন ছিল।
  • হনুমান রামের নির্দেশে পদ্ম সংগ্রহ করে আনেন।
  • দেবী দুর্গা পরীক্ষার জন্য একটি পদ্ম লুকিয়ে রাখেন।

রামের ত্যাগ:

  • রাম চারদিন চেষ্টা করেও শেষ পদ্মটি খুঁজে পাননি।
  • ১০৮ টি পদ্ম পূর্ণ না হলে দেবী প্রসন্ন হবেন না।
  • রাম তখন নিজের একটি চোখ উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নেন।
  • ঠিক সেই সময় দেবী দুর্গা প্রকাশ পান।

দেবীর আশীর্বাদ ও রাবণ বধ:

  • দেবী রামের ত্যাগে প্রসন্ন হন এবং তীরের মাথায় স্থান নেন।
  • রাম দেবীর আশীর্বাদ নিয়ে যুদ্ধে নামেন।
  • রাবণের মাথা কয়েকবার কাটা গেলেও দেবী দয়ার বশত তার মাথা পুনঃস্থাপন করেন।
  • অবশেষে রাম সেই তীরই রাবণের বুকে ছেড়ে যুদ্ধে জয়ী হন।
  • রাবণ বধের মূল কৃতিত্ব দেবী দুর্গার বলে বিশ্বাস করা হয়।

মা দূর্গা – যে আমাদের রক্ষা করে এবং প্রয়োজন পড়লে খাবাপদের সংহারও। কৃত্তিবাসী রামায়ণ অনুসারে রামায়নে যুদ্ধের সময়, রাবনকে বধ করার জন্য ভগবান রাম যার সহায়তা নিয়েছিলো – সে ছিলো মা শক্তি দূর্গামা। মনে করা হয় যে, রাবনের সাথে যুদ্ধ করার আগে শ্রী-রাম চারদিন পর্যন্ত মা দূর্গার আরাধনা করেছিলো।

আরও পড়ুন:  বর্তমান বাজারে বাংলাদেশে চান্দি রুপার দাম কত [Rupa Koto Taka Vori]

এমনটা করার জন্য মা দূর্গাকে ১০৮টি কমল ফুল নিবেদন করতে হতো। ভগবান রামের পার্মিশনে ফুল নিয়ে আসার কাজ হনুমানজী করেছিলো। চারদিকে ঘুরে হনুমানজী সবচেয়ে সুন্দর একশো আটটি কমলফুল ভগবান রামের কাছে জমা দেয়। কিন্তু মা দূর্গা এতো সহজেই মানতে রাজি ছিলোনা। উনি শ্রী-রামের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য ভাবে – এবং এক ফুল তার কাছে লুকিয়ে রাখে।

চারদিনে লাখো চেষ্টার পরেউ শ্রী-রাম ঐ শেষ ফুলটিকে খুজে পেলোনা। আর মা দূর্গাকে প্রসন্ন করার জন্য একশো আট ফুল জমা করা গুরুত্বপূর্ন ছিলো। শেষ পর্যন্ত শ্রীরাম এক ফুলের বদলে তার একটি চোখ উৎসর্গ করার ডিসিসন নেয়। উনি উনার চোখ বের করার জন্য এক তীর বের করে।

কিন্তু সে-সময়েই মা দূর্গা রামকে দর্শন দেয়। মা-দূর্গা শ্রীরামের তপস্যায় প্রসন্ন হয়ে উনার তীরে বিরাজমান হয়। ভগবান রাম মা-দূর্গার আশীর্বাদ নিয়ে রাবনের সাথে যুদ্ধ শুরু করে। একের পর এক রাবনের মাথা কাটা হচ্ছিলো পরক্ষনে আবারো ঠিক হচ্ছিলো।

এমন কয়েকবার হয়। তারপর শ্রী-রাম সেই তীর বের করে, যেটায় মা-দূর্গা বিরাজমান হয়েছিলো। ঐ তীরকে সোজা রাবনের পেটে ছেড়ে দেয়। আর তখন থেকেই মানা হয়, রাবনের বধ মা-দূর্গার হাতেই হয়েছিলো।

শুধু এটিই নয়, যখন মহিষাসুর নামে এক রাক্ষস চারদিকে ধ্বংসযজ্ঞে হাহাকার করেছিলো আর সে মানতো যে, কোনো পুরুষ তাকে বধ করতে পারবেনা, তখন মা দূর্গা এক ভয়াবহ রূপ ধারন করে। মহিষাসুরের সাথে যুদ্ধ করে এবং তাকে বধ করে।

দুর্গা দেবীর আগমনী উৎসব

আশ্বিন মাসে মহিষাসুর মর্দিনী মা দূর্গার পূজা খুব উৎসবমুখর পরিবেশের সাথে করা হয়। বড় বড় প্যান্ডেল বানিয়ে – মাটি দিয়ে তৈরি মায়ের ভব্য প্রতিমাকে বিরাজমান করানো হয়। ষষ্ঠীর দিন থেকে দূর্গাপূজার শুরু হয়। পরের তিনদিন পর্যন্ত দূর্গা,লক্ষী,সরস্বতী – এই তিনরূপের পূজা করা হয়। আর শেষদিন খুব ধুমধাম করে এই প্রতিমাদেরকে পবিত্র জলের মধ্যে বিসর্জন দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন:  আপনি কী জানেন অক্ষয় তৃতীয়া কি এবং কেন, অক্ষয় তৃতীয়ার মাহাত্ম্য কি? জেনে নিন তাহলে

দুই বাংলার সনাতনীরা মনে করে বছরের এই দশদিন মা দূর্গা আসলে মেয়ে হয়ে পৃথিবীতে তার বাবা-মায়ের বাড়িতে আসে এবং দশদিন পর শসুরবাড়ি ফিরে যায়। আর এজন্যই এই দশদিন জুড়ে সম্পূর্ন আনন্দ-ফূর্তিতে এই ধর্মীয় উৎসব পালন করা হয়। সম্পূর্ন শহরকে সাজানো হয়, এই দশদিন সব জাগায় এই পূজার প্রার্থনা, গীত, উৎসব হয়। দূর্গাপূজার মধ্যদিয়ে আমরা শক্তির পূজা করে থাকি। শক্তি, যে সরশ্বতী হয়ে রচনা করতে পারে আর দূর্গা হয়ে বিনাশও করতে পারে।

Intangible Culture Heritage of Humanity এর লিস্টে যুক্ত করে দেয়। ইউনেস্কো মানে যে, দূর্গাপূজা শুধু বাংলায় নয় সম্পূর্ন বিশ্বের অমূল্য ধর্মীয় উৎসবগুলির মধ্যে

বিশ্ব স্বীকৃতি

দূর্গাপূজা এতই ভব্যরূপে করা হয় যে, দুইহাজার একুশে ইউনেস্কো তাদের প্যারিস মিটিংয়ে, বাংলায় হওয়া দূর্গাপূজাকে Intangible Culture Heritage of Humanity এর লিস্টে যুক্ত করে দেয়। ইউনেস্কো মানে যে, দূর্গাপূজা শুধু বাংলায় নয় সম্পূর্ন বিশ্বের অমূল্য ধর্মীয় উৎসবগুলির মধ্যে একটি। নবরাত্রীর দিনে মা দূর্গার আলাদা আলাদা রূপের পূজা হয়। এভাবেই কোটি কোটি বছর আগে থেকে সনাতনী জাতি দূর্গাপূজা করে আসছে যা আজও বর্তমান। উপরে ভিডিও যুক্ত করে দিয়েছি আপনি দেখতে পারেন। এটিও পড়ুন রাম নবমী কি এবং রাম নবমী মাহাত্ম্য কী? জানতে পড়ুন

WhatsUpBD Desk

WhatsUpBD Desk আমরা অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত লেখক টিম, যারা বাজার দর, রোজগার, অটোমোবাইল, জীবনধারা, টেকনোলজি, টেলিকম, ধর্ম ও জাতি সহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করে থাকি। তথ্যনির্ভর এবং পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে তারা পাঠকদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেই।

Leave a Comment