বেগম রোকেয়া রচনা, নারীর অধিকার আন্দোলনের পথিকৃৎ।

Written by WhatsUpBD Desk

Published on:

বেগম রোকেয়া রচনা: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বেগম রোকেয়া নামটি একটি অমলিন আলোকস্তম্ভ। নারীবাদের পথিকৃৎ হিসেবে খ্যাত এই মহানারীর অমর সাহিত্যকর্ম আজও পাঠকদের মনে অমলিন আবেগ জাগিয়ে তোলে। ‘সুলতানার স্বপ্ন‘, ‘মতিচূর‘, ‘পদ্মরাগ‘, ‘অবরোধবাসিনী‘ ইত্যাদি রচনার মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। ১৮৮০ সালে পায়রাবন্দে জন্মগ্রহণকারী বেগম রোকেয়া ছিলেন একজন বহুমুখী প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব। কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, সমাজ সংস্কারক – এই সকল ক্ষেত্রেই তিনি তার অসাধারণ প্রতিভা প্রকাশ করেছিলেন। আসুন তার সম্মন্ধে আজ সহজ ভাষায় রচনা শিখে নেই।

সূচিপত্র

বেগম রোকেয়া রচনা ২০ পয়েন্ট

ভূমিকাঃ 

বাঙালি মুসলিম সমাজের নারীদের অন্ধকারময় পৃথিবীতে আলোকবার্তা হাতে এসেছিলেন বেগম রোকেয়া। তার সকল কর্মের মূলে ছিল নারীমুক্তির স্বপ্ন। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে গিয়েই তিনি একদিকে কলম তুলে নিয়েছিলেন, অন্যদিকে নারীদের নতুন পথের সন্ধান দেখিয়েছিলেন। এ কারণেই তিনি আজও ‘নারী জাগরণের অগ্রদূত’ হিসেবে পরিচিত।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

জন্ম ও শৈশবজীবনঃ 

বেগম রোকেয়ার জন্ম ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার পায়রাবন্দ গ্রামের এক জমিদার পরিবারে। বেগম রোকেয়ার পারিবারিক নাম রোকেয়া খাতুন। তার পিতার নাম জহিরুদ্দিন মুহম্মদ আবু আলী সাবের এবং মাতার নাম রাহাতুন্নেসা। বেগম রোকেয়া যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন তাঁদের জমিদারি অনেকটা পড়ন্ত দশায় ছিল। তবুও তার শৈশব কাটে তৎকালীন মুসলমান জমিদারি রীতি অনুযায়ী কঠোর পর্দা ও অবরোধের মধ্যে। তার নিজের ভাষায় “অবিবাহিত বালিকাদিগকে অতি ঘনিষ্ঠ আত্মীয় এবং বাড়ির চাকরাণী ব্যতীত অপর কোনো স্ত্রীলোক দেখিতে পায় না।” এমন কঠোর পর্দা প্রথার মধ্যেই বেগম রোকেয়ার বেড়ে ওঠা।

শিক্ষাজীবনঃ 

বিশ্বের অনেক কৃতী ব্যক্তির মতো বেগম রোকেয়াও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করতে পারেননি। নিজের প্রবল আগ্রহ ও কিছু মানুষের সহায়তায় তিনি হয়ে উঠেছিলেন স্বশিক্ষিত। তাইতো সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুল চালু করার সময় প্রথমদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষাদান সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই ছিল না। সামসুন্নাহার মাহমুদের ভাষায়- “রোকেয়া যখন প্রথম পাঁচটি ছাত্রী নিয়ে বালিকা স্কুল স্থাপন করেন, তখন তিনি ভেবে পাননি কী করে একজন শিক্ষয়িত্রী একই সঙ্গে পাঁচটি মেয়েকে পড়াতে পারে।” তবে তিনি বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, ফার্সি প্রভৃতি ভাষা সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান লাভ করেছিলেন। তার সাহিত্যে আমরা এর পরিচয় পাই।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

জীবনে অনুপ্রেরণার উৎসঃ 

বেগম রোকেয়া যে মুসলিম সমাজে বেড়ে উঠেছিল সেখানে স্ত্রীশিক্ষা হিসেবে প্রচলিত ছিল ‘টিয়া পাখির মতো কোরান শরীফ’ পাঠ, নামাজ, রোজা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পর্কে জ্ঞান। এছাড়া স্বামী বা নিকট আত্মীয়কে চিঠি লিখতে পারা, দু-একটি উর্দু-ফারসি পুঁথি পুস্তক পড়ার ক্ষমতা, সেলাই, রান্না ইত্যাদির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তখন মেয়েদের বাংলা শিক্ষা ছিল অনেকটা নিষিদ্ধ। কিন্তু এমন সমাজের মধ্যেও বেগম রোকেয়ার বড় বোন করিমুন্নেসা একটু আধটু বাংলা পড়েছিলেন এবং ছদ্মনামে বেশ কয়েকটা কবিতাও লিখেছিলেন। করিমুন্নেসার বিদ্যানুরাগ বেগম রোকেয়াকে অনুপ্রেরণা যোগায়। এর সাথে বড় ভাই ইব্রাহিম সাবেরের প্রচেষ্টায় তিনি শৈশব থেকে কুসংস্কারকে ঘৃণা করতে শেখেন এবং বিদ্যার্জন করেন। বিয়ের পর স্বামী সাখাওয়াত হোসেনও তাকে এক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন।

বিবাহিত জীবনঃ 

উর্দুভাষী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয়। তাদের বিয়ের সময় বেগম রোকেয়ার বয়স ছিল ১৬ এবং সাখাওয়াত হোসেনের ছিল ৩৮ বছর। সাখাওয়াত হোসেন প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর তাকে বিয়ে করেন। ব্যক্তি হিসেবে সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন একজন উদারমনা, রুচিশীল, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও কুসংস্কার বিরোধী মানুষ। এছাড়া স্ত্রীশিক্ষার পক্ষপাতীও ছিলেন তিনি। তাইতো তিনি বেগম রোকেয়াকে ইংরেজি শিক্ষার ব্যাপারে উৎসাহিত করেন। এমনকি ১৯০৯ সালে মৃত্যুর আগেই মেয়েদের শিক্ষার জন্য দশ হাজার টাকা দিয়ে গিয়েছিলেন। বেগম রোকেয়া ছিলেন নিঃসন্তান। তার দু’টি কন্যা সন্তান জন্ম হয়েছিল। কিন্তু তাদের অকাল মৃত্যু হয়।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বাংলা ভাষা চর্চায় প্রতিবন্ধকতাঃ 

উর্দুর প্রবল প্রতিকূল স্রোতে বাংলা ভাষাকে প্রাণপ্রণে আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন বেগম রোকেয়া। তার স্বামী ও অভিভাবকরা সবাই ছিলেন বাংলা ভাষার বিরোধী। কিন্তু এর মাঝেও তিনি বাংলা ভাষার চর্চা অব্যাহত রেখেছিলেন। এছাড়া স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে বাংলা শেখাবার ব্রতও নিয়েছিলেন। বাংলা ভাষার চর্চা অব্যাহত রাখতে তাকে যে নিদারুণ সংগ্রাম করতে হয়েছিল তার বর্ণনা ‘মতিচূর’ গ্রন্থের দ্বিতীয় খন্ডের করিমুন্নেসার নামে উৎসর্গ পত্রে রয়েছে।

ইংরেজি ভাষার চর্চাঃ 

বেগম রোকেয়া বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ না করলেও ইংরেজি ভাষার ওপর তার যথেষ্ট দখল ছিল। তার লেখা ওলফভট্র, Sultana’s Dream-এর প্রমাণ। এছাড়া বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিদের কাছে দেয়া ইংরেজিতে লেখা চিঠিও এর প্রমাণ বহন করে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

সাহিত্য কর্মঃ 

আধুনিক জাগরণশীল বাঙালি মুসলিম সমাজে বেগম রোকেয়াই প্রথম উল্লেখযোগ্য লেখিকা। সাহিত্য ক্ষেত্রে তিনি মিসেস আর এস হোসেন নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত রচনা পিপাসা। ১৯০১ সালে ‘নবপ্রভা’ পত্রিকায় এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এছাড়া তাঁর বিভিন্ন লেখা নবনূর, সওগাত, মোহাম্মদী ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত হত। তার গ্রন্থের সংখ্যা পাঁচটি। এগুলো হলো- মতিচূর (প্রথম খন্ড), সুলতানার স্বপ্ন, মতিচূর (দ্বিতীয় খন্ড), পদ্মরাগ ও অবরোধবাসিনী। এছাড়া সম্প্রতিকালে বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে আরও কিছু রচনা ও চিঠিপত্র পাওয়া গেছে।

সাহিত্য ও নারী মুক্তিঃ

“সুকঠিন গার্হস্থ্য ব্যাপার

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

সুশৃঙ্খলে কে পারে চালাতে

রাজ্যশাসনের রীতিনীতি

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

সূক্ষ্মভাবে রয়েছে ইহাতে।”

বেগম রোকেয়া এই কথাটি শুধু মুখেই বলেননি তা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন। তাইতো নারীদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে নারীর মানবীয় সত্তার প্রতিষ্ঠা কামনা করেছেন। মুসলিম নারী সমাজের কুসংস্কারের জাল ছিন্ন করতে এবং জড়তা দূর করতে তিনি সাহিত্যকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তিনি বলতেন- “না জাগিলে ভারত ললনা, এ ভারত আর জাগিবে না।” তাই তিনি তার লেখার মাধ্যমে নারীর জাগরণের জন্য লড়াই করেছেন। মুক্তিফল গল্পে তাই বলেছেন- “কন্যারা জাগ্রত না হওয়া পর্যন্ত দেশমাতৃকার মুক্তি অসম্ভব।” বেগম রোকেয়ার মতে এই জাগরণের প্রধান শর্ত শিক্ষা। তার ভাষায় “আমরা পুরুষের ন্যায় সাম্যক সুবিধা না পাইয়া পশ্চাতে পড়িয়া আছি।” তিনি বুঝেছিলেন শিক্ষাই হলো স্বনির্ভরতার সোপান। তাই শিক্ষাকে তিনি জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত দুর্ভাগ্য, আর্থিক সমস্যা, সামাজিক বাধা, লোকনিন্দা কোনো কিছুই তাকে এই ব্রত থেকে সরাতে পারেনি। তাইতো স্ত্রী জাতির অবনতি, অর্ধাঙ্গী, সুগৃহিনী, বোরকা, গৃহ, জাগো গো ভগিনী প্রভৃতি প্রবন্ধে তিনি এই শিক্ষার জয়গানই গেয়েছেন, দিয়েছেন নারী মুক্তির দীক্ষা।

আরও পড়ুন:  আমাদের গ্রাম রচনা ক্লাস ১০ সহ সকল শ্রেনীর জন্য
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

সমাজ সংগঠকঃ 

বেগম রোকেয়া কেবল লেখিকাই নন, নারী জাগরণের অন্যতম অগ্রপথিক ছিলেন। তিনি ১৯০৯ সালে ১ অক্টোবর ভাগলপুরে পাঁচজন ছাত্রী নিয়ে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই তিনি একটি আন্দোলনের সৃষ্টি করেন। এই ধারাই শিক্ষার ধারাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে তিনি ১৯১৬ সালে “আঞ্জুমানে খাওয়াতীনে ইসলাম” নামে একটি মহিলা সমিতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই বিদ্যালয় ও নারী সমিতির কাজে তিনি নিয়োজিত ছিলেন।

অন্তিম যাত্রাঃ

বেগম রোকেয়া ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর ৫২ বছর বয়সে আকস্মিক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগের রাতেও এগারোটা পর্যন্ত তিনি “নারীর অধিকার” নামক একটি প্রবন্ধ লেখার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। কলকাতার কাছাকাছি চব্বিশ পরগনা জেলার অন্তর্গত সোদপুরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার স্মরণে প্রথমে কলকাতার আলবার্ট হলে (বর্তমান কফি হাউজ) ও পরে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলে দুটি শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই শোকসভায় হিন্দু মুসলমান একই সাথে যোগদান করেছিলেন। সেখানে এক ভাষণে সৈয়দ এমদাদ আলী বলেছিলেন- “তাহার স্মৃতির উপরে আজ বাংলার মুসলমান সমাজ যে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতেছেন, বাংলার কোনো মুসলমান পুরুষের মৃত্যুতে সেরূপ করিয়াছেন বলিয়া জানি না।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

উপসংহারঃ 

বাঙালি মুসলিম সমাজে নারীমুক্তির অগ্রদূত হিসেবে বেগম রোকেয়ার আবির্ভাব সত্যিই বিস্ময়কর। কারণ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সংগ্রাম করেছিলেন নারীমুক্তির লক্ষ্যে, নারীশিক্ষার লক্ষ্যে। বর্তমান নারী সমাজ যে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারছে তার অনেকটাই বেগম রোকেয়ার অবদান। এ জন্যই ২০০৪ সালের বিবিসি জরিপে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় তিনি ষষ্ঠ অবস্থানে ছিলেন। তাই আবুল হুসেনের ভাষায় বলা যায় – “তাহার মতো চিন্তাশীল নারী প্রকৃতই নারীজাতি কেনো, সমগ্র মানবজাতির গৌরবের পাত্রী।

বেগম রোকেয়া রচনা ষষ্ঠ শ্রেণীর জন্য (Class 6)

ভূমিকাঃ

বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে নারীমুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ রােকেয়া সাখাওয়াত হােসেন। সময় ও যুগপরিবেশের তুলনায় অগ্রগামী ছিলেন তিনি। ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশের পশ্চাৎপদ সমাজে মেয়েদের বঞ্ছনা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে তিনি সােচ্চার কণ্ঠে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। নতুন চিন্তা, কৌতূহল, অনুসন্ধিৎসা ও যুক্তিপ্রিয়তা প্রভৃতির মাধ্যমে মানবিক মূল্যবােধের বাণীই তিনি প্রচার করেছেন। তাঁর স্বল্পকালীন জীবনের ব্রতই ছিল নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, সমাজপ্রগতি সৃষ্টি এবং মাতৃভাষা বাংলার গৌরব প্রতিষ্ঠা। তাই বাংলাদেশের সমাজবিপ্লবের ইতিহাসে এ মহীয়সী নারীর নাম গভীরভাবে জড়িত।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

জন্ম ও বংশ পরিচয়ঃ

রােকেয়া সাখাওয়াত হােসেন ১৮৮০ সালের ৯ই ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার পায়রাক গ্রামে এক ক্ষয়িষ্ণু জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। রােকেয়ার বাবার নাম ছিল মৌলভি জরিউদ্দীন মােহাম্মদ আবু আঙ্গী সাবের এবং মা ছিলেন রাহাতুন্নেসা। ছয় ভাইবােনের মধ্যে রােকেয়া ছিলেন চতুর্থ সন্তান। তাঁর পূর্বপুরুষ বাবর আলী আর বাবর তাব্রিজি ছিলেন একজন বহিরাগত মুসলমান। তিনি ভাগ্যান্বেষণে স্বদেশভূমি ইরান ছেড়ে ভারতে আসেন। রােকেয়া পূর্বপুরুষরা মুঘল সরকারের আমলে এবং ইংরেজ আমলে উচ্চপদে নিয়ােজিত ছিলেন। রােকেয়ার পিতৃপরিবার অর্থ পায়রাবন্দের বিখ্যাত সাবের পরিবার বিশাল জমিদারি ও রাজকীয় অনুগ্রহের অধিকারী ছিল। রােকেয়া ছিলেন এ পরিবারের অষ্টম উত্তর পুরুষ, রােকেয়ার জন্মলগ্নে তার পরিবার পূর্বপুরুষের বিলাসিতা ও অমিতাচারের ফলে করুণ পরিণতির শিকার হয় আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল।

রােকেয়ার বাল্যজীবন ও পারিবারিক আবহঃ

রােকেয়া ছিলেন এক ক্ষয়িষ্ণু বনেদি সামন্ত পরিবারের অংশ । ফলে বাংলাদেশের সমসাময়িক অন্যান্য বনেদি মুসলমান পরিবারের মতাে এ পরিবারের মানসিকতাও ছিল রক্ষণশীল । বিদ্যানুরাগ ও জ্ঞান- পিপাসার প্রতি তাঁর পিতার গভীর আগ্রহ থাকলেও তার মন কুসংস্কার ও গোঁড়ামিমুক্ত ছিল না। ফলে অন্যান্য মুসলিম পরিবারের মতাে এ পরিবারেও নারীরা ছিল সকল অর্থেই অন্তঃপুরিকা, অবরােধবাসিনী। পুরুষশাসিত পারিবারিক ও সামাজিক আবহে নারীর স্বাভাবিক বিকাশ ছিল অবহেলিত। এ আবহেই কেটেছে রােকেয়ার বাল্যজীবন। তৎকালীন মুসলিম পরিবারগুলােতে পর্দাপ্রথার নির্মমতা ছিল অবর্ণনীয়। পর্দার নির্মমতায় মেয়েদের স্বাধীন চলাফেরা ছিল নিষিদ্ধ। এ পারিবারিক মণ্ডলেই রােকেয়ার বাল্যজীবন ও কৈশাের কেটেছে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

রােকেয়ার শিক্ষালাভঃ 

রােকেয়ার পিতা নিজে বিদ্যোৎসাহী এবং ছেলেদের উচ্চশিক্ষিত করার ব্যাপারে আগ্রহী হলেও মেয়েদের লেখাপড়া শেখানাের জন্যে বলিষ্ঠ কোনাে ভূমিকা রাখেননি। পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী কেবল কোরআন পাঠের মধ্যেই মেয়েদের শিক্ষা আবদ্ধ ছিল। বাংলা শিক্ষার ব্যাপারে ছিল চরম অনাগ্রহ। পরিবারের নিয়মানুযায়ী রােকেয়ার শিক্ষাগ্রহণ এসব ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ ছিল । কিন্তু লেখাপড়ার বিষয়ে তাঁর ছিল চরম আগ্রহ। এক্ষেত্রে তিনি বড় বােন করিমুন্নেসার এবং বড় ভাই ইব্রাহিম সাবেরের সহযােগিতায় বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তীকালে তিনি স্বামী সৈয়দ সাখাওয়াত হােসেনের আনুকূল্য ও প্রেরণায় ইংরেজি শিক্ষায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন। এমনকি ইংরেজিতে সাখাওয়াতের সরকারি কাজেও তিনি অনেক সাহায্য করতেন। পিতৃপরিবারে শিক্ষালাভের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হলেও স্বামীর উদার দৃষ্টিভঙ্গির ফলে বিয়ের পরে রােকেয়ার বিদ্যাচর্চা পরিপূর্ণতা পায়।

রােকেয়ার শিক্ষা ও সমাজভাবনাঃ

বাঙালি মুসলমান সমাজে রােকেয়াই সর্বপ্রথম শিক্ষা বিস্তারকে নারীমুক্তি ও প্রগতির বৃহত্তর অভিযাত্রার সাথে যুক্ত করেন। তার সমাজভাবনা মূলত নারীমুক্তি ভাবনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। বাঙালি মুসলিম সমাজে। নারীর প্রতি যে নিষ্ঠুরতা ও অবিচার তারই বিরুদ্ধে ছিল রােকেয়ার আপসহীন সংগ্রাম। আর এ সামাজিক উৎপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় হিসেবে তিনি শিক্ষাকেই ভেবেছিলেন প্রধান মাধ্যম। এ প্রসঙ্গে তাঁর মত হলাে, “শিক্ষা বিস্তারই এইসব অত্যাচার নিবারণের একমাত্র মহৌষধ। শিক্ষা বলতে তিনি এমন শিক্ষাকে বুঝিয়েছেন, যা নারীদের মধ্যে তাদের আপন অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা, আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদাবােধ জাগাবে। নারীসমাজের মুক্তির জন্যে এ ধরনের শিক্ষা ভাবনা থেকেই তিনি ‘সাখাওয়াত মেমােরিয়াল স্কুল’প্রতিষ্ঠা করেন। রােকেয়ার সমাজভাবনার কেন্দ্রে ছিল নারীর অধিকারবােধ প্রতিষ্ঠা করা। এসব ক্ষেত্রে তাঁর কিছু ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি বর্তমানেও যথেষ্ট সমকালীন পুরুষশাসিত সমাজে নারীর সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি প্রধান উপায় ভেবেছেন অর্থনৈতিক মুক্তি বা স্বাবলম্বনকে। সমাজপ্রগতির ক্ষেত্রে এ ধরনের চিন্তা সমসাময়িককালে সাহসিকতার পরিচয় তুলে ধরে, সমাজপ্রগতির ক্ষেত্রে রােকেয়া ছিলেন যুক্তিবাদ ও মুক্তদৃষ্টির অধিকারী। তাই পুরুষ নারীর শাসক বা প্রভু নয় বরং সহযােগী – এ মতেই তিনি বিশ্বাসী আর এতেই তিনি সমাজের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল। দেখেছেন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

রােকেয়ার স্বদেশপ্রেমঃ 

নারীমুক্তি ও নারীশিক্ষার জন্যে রােকেয়ার আজীবন সংগ্রাম স্বদেশের প্রতি ভালােবাসার অন্যতম প্রধান অঙ্গ। তাঁর অনেক প্রবন্ধে তিনি সাধারণ মানুষের কথা ব্যক্ত করেছেন। মুক্তিফল’ নামক রূপক কাহিনিতে তিনি ভারতবর্ষের পরাধীন অবস্থার অবমাননার চিত্র এবং জন্মভূমির দীনতা দূর করার যে উপায় বলেছেন তা তাঁর গভীর দেশপ্রেমের নিদর্শন। তবে তিনি অরাজনৈতিক তৎপরতার চেয়ে অবরুদ্ধ সমাজব্যবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে আত্মনিয়ােগকে গুরুত্বপূর্ণ ভেবেছিলেন। তার এ প্রয়াস স্বদেশের প্রতি অকুণ্ঠ ভালােবাসার নির্মল প্রকাশ। স্বদেশের প্রতি এ আকর্ষণই তাকে পরিবারের অলীক আভিজাত্যের মুখােশ ত্যাগ করে তাঁর প্রাণের ভাষা বাংলাকে গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছিল। শিক্ষার মাধ্যম হিসেবেও তিনি মাতৃভাষার প্রয়ােজনীয়তা উপলব্ধি করেছেন। পৌরাণিক মনে স্ত্রী বিদ্বেষ’ প্রবন্ধে তিনি এ বিষয়ে বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিবাদী মনােভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন।

রােকেয়ার সাহিত্য সাধনাঃ 

সমাজসংস্কার, শিক্ষা বিস্তার তথা নারীমুক্তির লক্ষ্যে তাঁর বিপুল কর্মপ্রচেষ্টার অন্যতম বহিঃপ্রকাশ ছিল তাঁর সাহিত্য সাধনা। পরিবারের কঠোর নিয়মতান্ত্রিক পরিবেশে নারী জীবনের যে অভিজ্ঞতা এবং পাশ্চাত্য সাহিত্য পাঠে নারীমুক্তি ও সমঅধিকারের যে চেতনা তিনি পেয়েছিলেন তাই তাঁর সাহিত্যের পটভূমিকা তৈরি করেছিল। তাঁর রচনাগুলােতে শিক্ষা ও সমাজবিষয়ক ভাবনা, দূরদৃষ্টি, যুক্তিবাদ ও অসাম্প্রদায়িক মানসিকতার পরিচয় সুস্পষ্ট। সমাজের কল্যাণ সাধনই তাঁর সাহিত্য সাধনার মূল লক্ষ্য। বিশেষ করে তার প্রবন্ধগুলােতেই তাঁর সুপরিশীলিত ও সুচিন্তিত মতের স্পষ্ট প্রকাশ ঘটেছে। এর মধ্যে স্ত্রী জাতির অবনতি’, ‘অর্ধাঙ্গী’, ‘নিরীহ বাঙালি’, ‘বােরকা প্রভৃতি প্রবন্ধ উল্লেখযােগ্য। তার রূপকথাগুলােও দৃষ্টিভঙ্গি ও সমসাময়িক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে তাঁর মনােভাবের চমত্তার বহিঃপ্রকাশ। অল্প কয়েকটি রচনা বাদ দিলে রােকেয়ার প্রায় সমস্ত রচনারই চরিত্র কমবেশি সমাজসমালােচনামূলক। দুই খণ্ড ‘মতিচুর’সহ রােকেয়ার মােট গ্রন্থ সংখ্যা ৫ এগুলাে হলাে— মতিচুর (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড), Sultana’s Dream, পদ্মরাগ, অবরােধবাসিনী। লেখিকার সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য হলাে সহজ ও সরস ভাষা এবং তীক্ষ যুক্তি। তবে তার ব্যঙ্গাত্মক রচনাগুলাে অতি সুন্দর ও সার্থক।

আরও পড়ুন:  দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা পড়ুন সহজ বাংলায় | Doinondin Jibone Biggan Rochona
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

নারী জাগরণের পথিকৃৎ রােকেয়াঃ 

প্রতিকূল সময় ও বিরুদ্ধ পরিবেশের সাথে লড়াই শৈশব থেকেই রােকেয়ার ভেতর জন্ম দিয়েছিল একজন আপসহীন সংগ্রামী নারীসত্তার । পুরুষশাসিত সমাজের বিধিনিষেধ তাকে এ চেতনায় উদ্দীপ্ত করে— আত্মনির্ভরতার পথেই নারীজাতির প্রকৃত মুক্তি বা প্রগতি সম্ভব। ভারতবর্ষের শাসনতান্ত্রিক সংস্কারে নারীর অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে রােকেয়া স্পষ্ট ধারণা পােষণ করতেন । তাই তিনি নারীসমাজের শাসনতান্ত্রিক অধিকার বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ,পিতা ও অভিভাবকের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিতে অধিকার, জীবনােপায় অবলম্বনের অধিকার প্রভৃতি বিষয়ে নানাভাবে দাবি উপস্থাপন ও প্রতিষ্ঠা করেছেন। সর্বাত্মক নারীমুক্তির প্রত্যক্ষ সংগ্রামই ছিল রােকেয়ার সংগ্রাম। তবে নারীমুক্তির নামে উগ্রতাকে তিনি কখনােই সমর্থন দেননি। এর প্রকাশ রয়েছে অর্ধাঙ্গী’ প্রবন্ধে । তিনি মূলত নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেছেন। অর্থাৎ সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্যেই সংগ্রাম করেছেন। এ সাম্য তিনি যেমন কামনা করেছেন পরিবারে। তেমনি। ‘সুলতানার স্বপ্ন’, ‘মুক্তিফল’ প্রভৃতি রচনায় সামাজিক ও রাজনৈতিক মুক্তির জন্যে তিনি একান্তভাবে।উল্লেখ করেছেন পুরুষের সঙ্গে নারীর কল্যাণময় ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা। তাই তিনি পুরুষকে নারীর স্বামী নয় বরং অর্ধাঙ্গ’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনিই প্রথম মুসলিম নারী যিনি সমাজ ও দেশের কল্যাণ দেখেছেন নারী-পুরুষের সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার ভেতর দিয়ে। আর তাই সমকালে তথাকথিত বনেদি মুসলিম পারিবারিক ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে ছিল তার সংগ্রাম।

উপসংহারঃ 

বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রপথিক রােকেয়া সাখাওয়াত হােসেন । প্রকৃত নাম রােকেয়া খাতুন। স্বল্পায়ু। জীবনে তিনি সাহিত্যসাধনা ও বাস্তব কর্মপ্রয়াসের মাধ্যমে বাঙালি নারীর জীবনে সর্বপ্রথম আত্মমর্যাদা ও গৌরবের দীপ্ত মশাল প্রজ্জ্বলিত করে দিয়েছেন। সমাজের কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে তিনি ছিলেন অক্লান্ত কর্মী; অশিক্ষা ও কুসংস্কার তাঁর চেতনাকে সবসময় আঘাত করেছে। তাই এরই বিরুদ্ধে ছিল তাঁর আজীবন সংগ্রাম। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর এ মহীয়সী নারীর জীবনাবসান ঘটে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বেগম রোকেয়া রচনা ৫ম শ্রেণী (Class 5)

ভূমিকাঃ 

বাঙালি মুসলিম সমাজের নানা কুসংস্কার ও অবরোধের বিরুদ্ধে যে কয়েকজন খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব ঘটেছে বেগম রোকেয়া তাদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর মত প্রতিভাবান ব্যক্তি তৎকালীন সমাজে তথ্য বর্তমান সমাজে অপ্রতুল। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে যেখানে মুসলমান সমাজের মেয়েদের পরিবার এমন কি পরিবারের সদস্যদের সামনে ঘোরাফেরা করা নিন্দনীয় ছিল, তেমনই এক সময় তাঁর জীবন ও কর্মে প্রতিধ্বনিত হয়েছে জাগরণের গান। পাঁচ বছর বয়সে যেখানে পর্দা করতে হয়েছে সেখানে অবরোধবাসীনী হিসেবে নিজেকে তিনি আবদ্ধ রাখতে চাননি। নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সম্মানজনক আসনে।

বেগম রোকেয়ার পরিচয়ঃ 

বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার ছিল সম্ভ্রান্ত মুসলিম জমিদার পরিবার। তাঁর পিতৃপ্রদত্ত নাম রোকেয়া খাতুন। সাধারণের কাছে তিনি বেগম রোকেয়া নামে পরিচিত। বিবাহের পর স্বামীর নামের সাথে নাম মিলিয়ে তাঁর নাম হয় মিসেস রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। লেখক হিসেবে তাঁর নাম মিসেস আর. এস. হোসেন। বেগম রোকেয়ার পিতার নাম জহিরউদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী সাবের এবং মাতার নাম রাহাতুন্নেসা সাবের চৌধুরাণী। বেগম রোকেয়ার দুই ভাই এবং তিনি ছাড়া আরও দুই বোন ছিল। মাত্র ষোলো বছর বয়সে রোকেয়ার বিয়ে হয় বিহারের ভাগলপুর নিবাসী উর্দুভাষী বিপত্নীক সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে। তিনি ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বেগম রোকেয়ার লেখাপড়াঃ

বেগম রোকেয়ার প্রাথমিক জ্ঞান হয় পরিবারেই। তিনি বড়বোন করিমুন্নেসার কাছে বাংলা ও ইংরেজি বর্ণ পরিচয় শেখেন। বাবা নারী শিক্ষার বিরোধী হওয়ায় তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হন। বেগম রোকেয়ার আগ্রহে বড় ভাই আবুল আসাদ ইব্রাহীম সাবেরের কাছে শিক্ষা লাভ করেন। বিয়ের পর সমাজ সচেতন, সংস্কারমুক্ত, প্রগতিশীল দূরদৃষ্টিসম্পন্ন স্বামী সাখাওয়াত হোসেনের সংস্পর্শে তাঁর প্রকৃত লেখাপড়া শুরু হয়। তিনি দেশি- বিদেশি লেখকদের বিভিন্ন গ্রন্থের সাথে পরিচিত হন এবং ক্রমশ ইংরেজি ভাষায় পরিপক্কতা অর্জন করতে থাকেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন ইংরেজি বই পাঠ করেন এবং সাহিত্য চর্চা করতে থাকেন।

বেগম রোকেয়ার মানস সংস্কৃতিঃ

বেগম রোকেয়ার মন-মানসিকতা ছিল আধুনিক। তিনি যুগের চেয়ে চিন্তায় ছিলেন অগ্রগামী। তাঁর চিন্তাভাবনার সম্প্রসারিত দিক হলো বর্তমানের নারী জাগরণমূলক না নারীর অধিকার আন্দোলনের ভিত্তি। তাঁর মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদীতা, ইহজাগতিক বা বস্তুবাদী চিন্তা, ধর্ম নিরপেক্ষতা, মানবতা প্রভৃতির সন্নিবেশ ঘটেছিল। তাঁর চিন্তা তাঁর কর্মের মধ্যে প্রতিফলিত।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

নারীমুক্তি আন্দোলনঃ

সমাজে নারীর অবস্থান ও তাদের দুর্দশার করুণ অবস্থা প্রত্যক্ষ করে তিনি নারীমুক্তির জন্য আন্দোলন করেন। তাঁর নারীমুক্তির মূল কথা হলো সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন এবং শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ। তাঁর নারী মুক্তির দর্শন, সাহিত্য ও কর্মজীবনের নানা সংস্কারমূলক কার্যাবলির মধ্যে ফুটে উঠেছে। তিনি পুরুষতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং প্রচলিত ধর্মীয় গোঁড়ামিকে কটাক্ষ করে নারী শিক্ষা সম্প্রসারণ করতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁরই অর্থ ও পরিকল্পনা অনুসারে ১৯০৯ সালের ১ অক্টোবর ভাগলপুরে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল নামে একটি প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

সমাজ সংস্কারমূলক কর্মসূচিঃ

বেগম রোকেয়ার জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালি নারীর জাগরণ এবং প্রচলিত সমাজের সংস্কার। তিনি শুধু সাহিত্য রচনা নয় বাস্তব জীবনে সংস্কার সাধনের চেষ্টা করেন। এ জন্য তিনি দুটি লক্ষ্য স্থির করেন। 

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

যথাঃ-

  1. নারীশিক্ষার ব্যাপক ব্যবস্থা করা।
  2. অবরোধ প্রথার অবসান।

তিনি নারীকে পুরুষের সমান মর্যাদা দিয়েছেন এবং নারীর আত্মবোধের উন্মেষ সাধন করতে সহায়তা করেছেন।বেগম রোকেয়া মনে করতেন বাঙালি মুসলিম নারীকে শিক্ষিত করার অর্থই পুরো সমাজকে জাগ্রত করা।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

মুসলিম মহিলা সমিতি প্রতিষ্ঠাঃ

১৯১৫ সালে বেগম রোকেয়া আঞ্জুমান খাওয়াতীনে ইসলাম বা মুসলিম মহিলা সমিতি গঠন করেন। তাঁর সমস্ত কর্মকাণ্ডে এ সমিতির বিশেষ ভূমিকা ছিল। এ সমিতির মুসলিম নারী সমাজকে সচেতন করা, তাদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করা প্রভৃতি উদ্দেশ্যে কাজ করে। এছাড়াও নানা ধরনের সেবামূলক কাজও করে এ সমিতি। যেমনঃ

  1. বিধবা ও অসহায় নারীদের অর্থ সাহায্য দেওয়া।
  2. বয়ঃপ্রাপ্ত দরদ কুমারী নারীদের বিবাহ দান।
  3. অভাবী বালিকাদের শিক্ষা লাভে অর্থ সাহায্য করা।
  4. মহিলাদের পুনর্বাসন করা প্রভৃতি।

এ সমিতি মুসলিম মহিলা সমাজের জন্য নিরলসভাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে কাজ করেছে। তৎকালীন সমাজে মুসলমান নারী সমিতি গঠন ও পরিচালনা করেছে তা ছিল কল্পনার বাইরে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

সাহিত্যকর্মঃ

বেগম রোকেয়া তাঁর জীবদ্দশায় অনেকগুলো প্রবন্ধ ও গল্প রচনা করেছেন। তাঁর পাঁচটি গ্রন্হ রয়েছে।যথঃ- 

  1. মতিচুর ১ম খণ্ড (১৯০৪)
  2. পরাগ (১৯২৪)
  3. Sultana’s Dream (1908)
  4. মতিচুল ২য় খণ্ড (১৯২২)
  5. অবরোধবাসিনী (১৯৩১)

এছাড়া তিনি বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা সাধনাধুমকেতুবার্ষিক সওগতিনওরোজমোহাম্মদীসাহিত্যিকসবুজপত্রমোয়াজ্জিনThe Mussalmansমাহে নও প্রভৃতি পত্রিকায় অনেক প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা প্রকাশ করেন। তিনি ইংরেজিতে অনেকগুলো প্রবন্ধ লিখেছেন। তাঁর লেখা অনেক প্রবন্ধ আজও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্য হিসেবে পড়ানো হয়। তিনি বাঙালি সাহিত্য সাধনায় উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে স্থান দখল করে আছেন।

আরও পড়ুন:  অধ্যবসায় রচনা শিখুন সহজ ভাষায়, সকল শ্রেণীর জন্য
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

নারীবাদ ও তাঁর অবস্থানঃ

বেগম রোকেয়াকে অনেকে নারীবাদী বলেন, আবার অনেকে তাকে নারীক্ষমতা উন্নয়নের অগ্রদূত হিসেবে আখ্যায়িত করেন। হুমায়ুন আজাদ বেগম রোকেয়াকে নারীবাদী হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার নারীমুক্তির দর্শন ‘নারীবাদ’ এবং নারীমুক্তির আন্দোলন তাঁর ভাবমূর্তি নারীবাদী। তাঁর সমস্ত সাহিত্যে রয়েছে পুরুষতন্ত্রের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ। বেবী মওদুদ ও বাংলাদেশের নারীগ্রন্থে বেগম রোকেয়াকে নারীবাদী বলে অভিহিত করেছেন। তবে অনেকে মনে করেন বেগম রোকেয়া প্রচলিত যৌনাশ্রয়ী নারীবাদীদের মত নন। সমাজের বাস্তবতাকে তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেছেন। ফলে তাঁর মধ্যে পুরুষ বিদ্বেষী ভাব জাগ্রত। তিনি অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের সহায়তা ও সহমর্মিতাও স্বীকার করেন। তাই চূড়ান্ত অর্থে তাঁকে নারীবাদী না বলে নারী উন্নয়নের অগ্রদূত বা নারী ক্ষমতায়নের একনিষ্ঠ সাধক ও কর্মী হিসেবে গ্রহণ করেন। মূলত বেগম রোকেয়া বর্তমানে সমাজে প্রচলিত নারীবাদী অর্থে নারীবাদী নন। তিনি বিশুদ্ধ নারীবাদের সমর্থক এটা বলাই অধিক যুক্তিযুক্ত।

উপসংহারঃ

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, কথায়, কাজে, চিন্তায় এবং বাস্তব জীবনে যে কয়েকজন বাঙালি দার্শনিক বিশেষ অবদান রেখেছেন বেগম রোকেয়া তাদের মধ্যে কর্মের মধ্য দিয়ে প্রস্ফুটিত। তাঁর জীবন ও সাহিত্য কর্ম অনুসন্ধান যুক্তিবাদী বিজ্ঞানসম্মত বেগম রোকেয়াকে অন্যতম। বেগম রোকেয়ার দর্শন চিন্তা, তাঁর জীবন ও করলে আমরা দৃঢ়চেতা, সংস্কারমুক্ত, দেখতে পায়। বাঙালি নারীশিক্ষার যে সূচনা তিনি করেছিলেন ফল বর্তমান নারীশিক্ষা ব্যবস্হায় নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণ।তিনি ভ্রমণ করেছিলেন দ্বারে দ্বারে আর বর্তমান নারী তারই সূত্র ধরে ভ্রমণ করেছে আকাশে। এই মহীয়সী নারী ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর পরলোকে গমন করেন। পিছনে রেখে যান কর্মময় নারীর মুক্তির দর্শন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বেগম রোকেয়া রচনা ৪০০ শব্দ (Begum Rokeya)

ভূমিকাঃ 

দক্ষিণ এশিয়ার নারীমুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসেবে যাঁকে গণ্য করা হয় তিনি হলেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, যিনি বেশি পরিচিত বেগম রোকেয়া নামে। রোকেয়া ছিলেন অবিভক্ত ভারতের (এখন বাংলাদেশের) একজন বাঙালি নারীবাদী চিন্তাবিদ, সাহিত্যিক, শিক্ষাব্রতী ও সমাজসংস্কারক।

জন্মঃ

রোকেয়া খাতুন ১৮৮০ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে এক বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা জহিরুদ্দিন মুহম্মদ আবু আলি হায়দার সাবের ছিলেন একজন জমিদার ও বহুভাষী বুদ্ধিজীবী। মায়ের নাম রহতুন্নেসা সবেরা চৌধুরানি। দুই বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়ো ভাই ইব্রাহিম সাবের ও পিঠোপিঠি বোন করিমুন্নেসা খনম চৌধুরানি রোকেয়া খাতুনের জীবনকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেন। দুই বোন করিমুন্নেসা ও রোকেয়া বাংলা ও ইংরেজি ভাষা শেখেন দাদা ইব্রাহিমের কাছে। এ করিমুন্নেসা পরবর্তীকালে কবি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। রোকেয়া ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে ১৮ বছর বয়সে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। তাঁর স্বামী খান বাহাদুর সাখাওয়াত হোসেন রোকেয়াকে বাংলা ও ইংরেজি ভাষা শিখতে উৎসাহিত করেন। এ ছাড়াও তিনি রোকেয়াকে সাহিত্যরচনাতেও উদ্বুদ্ধ করেন এবং পরামর্শ দেন বাংলাকেই লেখালেখির প্রধান ভাষা হিসেবে ব্যবহার করতে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

কর্মজীবনঃ

পিপাসা‘ শীর্ষক একটি বাংলা রচনার মাধ্যমে রোকেয়ার সাহিত্য বিষয়ক কর্মকাণ্ডের সূচনা ঘটে ১৯০২ সালে। ১৯০৯ সালে তাঁর স্বামীর মৃত্যুর আগে তিনি দুটি বই—প্রবন্ধগ্রন্থ ‘মতিচূর’ (১ম খণ্ড, ১৯০৫) ও নারীবাদী ইউটোপিয়ান সাহিত্য ঘরানার উপন্যাসিকা ‘Sultana’s Dream‘ (১৯০৮) প্রকাশ করেন। মূল ইংরেজি ভাষায় রচিত রচনাটি রোকেয়া পরে নিজেই ‘সুলতানার স্বপ্ন’ নামে বাংলায় অনুবাদ করেন। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হল—‘পদ্মরাগ’ (উপন্যাস, ১৯২৪), অবরোধবাসিনী (নকশাধর্মী গদ্যগন্থ, ১৯৩১) প্রভৃতি। মতিচূর ২য় খণ্ডে (১৯২২) আছে ‘সৌরজগৎ’, ‘ডেলিসিয়া হত্যা’, ‘জ্ঞান-ফল’, ‘নার্স নেলী’, ‘নারী-সৃষ্টি’, ‘মুকি-ফল’ ইত্যাদি গল্প ও রূপকথা। 

এ ছাড়াও রোকেয়ার সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে বহু প্রবন্ধ, ছোটোগল্প, কবিতা, ব্যঙ্গাত্মক রচনা ও অনুবাদ। নবনূর, সওগাত, মোহাম্মদী, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা, নওরোজ, আল-এসলাম, The Mussalman, Indian Ladies Magazine প্রভৃতি পত্রিকায় নিয়মিতভাবে তাঁর রচনা প্রকাশিত হতে থাকে। স্বামীর মৃত্যুর পর রোকেয়া নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। ইতিপূর্বে তাঁদের দুটি কন্যাসন্তান অকালে মারা গিয়েছিল। রোকেয়া নারীশিক্ষাবিস্তার ও সমাজসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। স্বামীর দেওয়া অর্থ দিয়ে তিনি ভাগলপুরে ১৯০৯ সালের ১ অক্টোবর ‘সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ স্থাপন করেন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

কিন্তু পারিবারিক কারণে তাঁকে ভাগলপুর ছেড়ে কলকাতায় চলে আসতে হলে ১৯১১ সালের ১৬ মার্চ কলকাতার ১৩ নং ওয়ালিউল্লাহ লেনের একটি বাড়িতে মাত্র আট জন ছাত্রী নিয়ে শুরু হয় ‘সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’। এই স্কুলই ১৯৩১ সালে পরিণত হয় উচ্চ ইংরেজি গার্লস স্কুলে, যা ১৯৬৮ সালে বেগম রোকেয়ার নিজস্ব বাড়ি ১৭ নং লর্ড সিনহা রোডে স্থায়ীভাবে ঠিকানা বদল করে। প্রায় দুই দশকব্যাপী বেগম রোকেয়ার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ও তত্ত্বাবধানে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি হয়ে ওঠে সে যুগের মুসলমান মেয়েদের জন্য শিক্ষালাভের আদর্শ স্থান। ১৯১৯ সালে কলকাতায় সরকার কর্তৃক ‘মুসলিম মহিলা ট্রেনিং স্কুল’ স্থাপনার পেছনেও বেগম রোকেয়ার অবদান ছিল অনস্বীকার্য।

বেগম রোকেয়ার সাহিত্যকর্ম জুড়ে রয়েছে সামাজিক কুসংস্কার, অবরোধ প্রথা, নারীদের প্রতি অন্যায়-অবিচার ইত্যাদি প্রসঙ্গ। পুরুষশাসিত সমাজে নারীর অবমাননা, দুরবস্থার কথা এবং এই সব কিছু থেকে মুক্তিলাভের একমাত্র উপায় শিক্ষা, এই মতকে তাঁর নিজস্ব তির্যক ও তীক্ষ্ণ ভঙ্গির লিখনশৈলীতে তুলে ধরার চেষ্টা। বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধেও তাঁর লেখনী ছিল সরব। স্বকীয়তায় মণ্ডিত তাঁর লিখনশৈলীর মধ্যে শ্লেষ যেমন আছে তেমনই আছে যুক্তি, উদ্ভাবনী দিক ও কৌতুকের ব্যবহার। বিষয়বৈচিত্র্য ছিল তাঁর রচনার আরও একটি বৈশিষ্ট্য।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

এমনকি বিজ্ঞান সম্পর্কেও তাঁর অনুসন্ধিৎসু মনের প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় অনেক রচনায়। সেই সময়ের রাজনীতিও তাঁর রচনার বিষয় হয়েছে কখনো-কখনো। ‘নবনূর’, ‘নবপ্রভা’, “বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’, ‘সওগাত’, ‘ভারতমহিলা’, ‘The Mussalman’, ‘Indian Ladies Magazine‘ প্রভৃতি পত্রিকায় তাঁর রচনা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হত। বাংলা ভাষার প্রতি তাঁর ছিল এক বিশেষ টান । আর তাই, সে যুগের অভিজাত মুসলমানদের মধ্যে উর্দুর প্রচলন বেশি হওয়া সত্ত্বেও রোকেয়া তাঁর সাহিতকর্মের মাধ্যম হিসেবে বাংলাকেই বেছে নেন

উপসংহারঃ

নারীমুক্তি ধ্যানধারণার অগ্রদূত নারী জাগরণের আলোকবর্তিকাস্বরূপ এই মহীয়সী নারীর মাত্র বাহান্ন বছর বয়সে ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর কলকাতায় জীবনাবসান ঘটে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

গুরুত্বপূর্ন কথা

বেগম রোকেয়া ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। নারীর অধিকার, শিক্ষা, স্বাধীনতা, এবং সমাজ সংস্কারের মতো বিষয়ে তার অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর রচনাগুলি আজও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে প্রাসঙ্গিক।

বেগম রোকেয়া কেবল একজন সাহিত্যিকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সাহসী নারী, একজন সমাজ সংস্কারক, এবং একজন চিন্তাবিদ। তাঁর সাহিত্যকর্ম আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে, চিন্তা করতে বাধ্য করে, এবং ভবিষ্যতের জন্য স্বপ্ন দেখতে শেখায়।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণে আমাদের সকলেরই এগিয়ে আসতে হবে। নারীর অধিকার রক্ষা, শিক্ষার প্রসার, এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষের জন্য সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। আসুন, আমরা সকলে মিলে বেগম রোকেয়ার স্বপ্নের বাংলা গড়ে তোলি।

পড়ে দেখুন>> সত্যবাদিতা রচনা সকল শ্রেনীর জন্য, পড়ুন এবং পড়ান

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পড়ে দেখুন>> দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা পড়ুন সহজ বাংলায় | Doinondin Jibone Biggan Rochona

DISCLAIMER

এই আর্টিকেলে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বিশ্বস্ত মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য যে আমরা সমস্ত নির্ভুল তথ্য দিয়েছি। কোনো প্রতিক্রিয়া বা অভিযোগের জন্য [email protected] মেইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপJoin Us
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলJoin Us
আমাদের ফেসবুক পেজFollow Us
আমাদের কোরা পেজFollow Us
গু নিউজে ফলো করুনFollow Us
WhatsUpBD Desk

WhatsUpBD Desk আমরা অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত লেখক টিম, যারা বাজার দর, রোজগার, অটোমোবাইল, জীবনধারা, টেকনোলজি, টেলিকম, ধর্ম ও জাতি সহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করে থাকি। তথ্যনির্ভর এবং পাঠকবান্ধব লেখার মাধ্যমে তারা পাঠকদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেই। প্রযুক্তি থেকে জীবনযাপন, বাজার বিশ্লেষণ থেকে ধর্মীয় ভাবনা সব ক্ষেত্রেই আমাদের রয়েছে সুগভীর অভিজ্ঞতা।

রিলেটেড পোষ্ট

Janhvi Kapoor Latest Photo: Valentine’s Day তে যে পোশাক পড়লেন Oneplus Nord ce 3 lite 5g price in Bangladesh Mobiledokan The Kerala Story OTT Watch Online – ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কীবোর্ডে স্পেসবার সবচেয়ে বড় কেন? আসল কারন জেনে নিন। আমি আমার এসএসসি রেজাল্ট কিভাবে দেখব, সহজ নিয়ম কী?