রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়ারদের (Civic Volunteer) জন্য আসতে চলেছে বড় সুখবর। রাজ্য সরকার এবার তাঁদের বেতন বৃদ্ধি, চাকরির স্থায়িত্ব এবং নতুন সুযোগ-সুবিধার কথা ভাবছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের রাজ্য বাজেট পাশের পরেই এই ঘোষণা আসতে পারে বলে জানা গেছে। গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেছিলেন যে সিভিকদের সব দাবি ধাপে ধাপে পূরণ করা হবে। এবার সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা জোরদার হয়েছে।
বর্তমানে রাজ্যে প্রায় আড়াই লক্ষেরও বেশি সিভিক ভলান্টিয়ার কর্মরত রয়েছেন। তাঁরা পুলিশের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করেন। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সহায়তা করা তাঁদের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা বেতন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁদের দাবি এবার বাস্তবে পরিণত হতে পারে।
সিভিক ভলান্টিয়ার খবর ২০২৫
পরিবর্তন | বিবরণ |
---|---|
বেতন বৃদ্ধি | মাসিক বেতন ₹2,000 থেকে ₹5,000 টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে |
চাকরি স্থায়ীকরণ | চুক্তিভিত্তিক কাজের পরিবর্তে স্থায়ী চাকরির সম্ভাবনা |
স্বাস্থ্য ও বিমা সুবিধা | কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা ও অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু হতে পারে |
প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধি | কর্মীদের নতুন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় দক্ষ করে তোলা হবে |
১. বেতন বৃদ্ধি
সিভিক ভলান্টিয়ারদের দীর্ঘদিনের প্রধান দাবি ছিল বেতন বৃদ্ধি (Salary Hike)। বর্তমানে অনেক সিভিক কর্মীর মাসিক বেতন মাত্র ₹৮,০০০ – ₹১০,০০০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। যা বর্তমান বাজারের দামের তুলনায় খুবই কম। এবার প্রত্যাশা করা হচ্ছে যে তাঁদের মাসিক বেতন ₹২,০০০ – ₹৫,০০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে।
একজন সিভিক ভলান্টিয়ার বললেন,
“আমরা প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম করি। কিন্তু বর্তমান বেতন দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। যদি বেতন বাড়ানো হয়, তবে আমাদের পরিবারের অনেক সমস্যা দূর হবে।”
২. চাকরির স্থায়ীকরণ
এখন পর্যন্ত সিভিক কর্মীদের চুক্তিভিত্তিক (Contractual) ভিত্তিতে কাজ করতে হয়। যার ফলে তাঁদের চাকরির কোনও নিশ্চয়তা নেই। অনেকেই বারবার সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন যেন তাঁদের স্থায়ী (Permanent) করা হয়। এবার সরকার সেই বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি সিভিক ভলান্টিয়ারদের স্থায়ী করা হয়, তাহলে তাঁদের কাজের প্রতি আরো দায়িত্বশীল করে তোলা যাবে এবং পুলিশ প্রশাসনেরও সুবিধা হবে।
৩. স্বাস্থ্য ও বিমা সুবিধা
অনেক সিভিক কর্মী বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেন। রাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, অপরাধ দমন এবং অন্যান্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁদের জীবনের ঝুঁকি থাকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাঁদের জন্য কোনও স্বাস্থ্যবিমা (Health Insurance) বা সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই।
নতুন পরিকল্পনায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা চালু করা হতে পারে। এর ফলে তাঁরা ও তাঁদের পরিবার সুরক্ষিত জীবনযাপন করতে পারবেন।
৪. প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন
কর্মীদের আরও দক্ষ করে তুলতে নতুন প্রশিক্ষণ (Training) কর্মসূচি চালু করা হতে পারে। এর মাধ্যমে সিভিক ভলান্টিয়ারদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানো হবে।
প্রশিক্ষণের প্রধান দিকসমূহ:
✔ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি
✔ নাগরিক সুরক্ষার কৌশল
✔ প্রাথমিক চিকিৎসা ও জরুরি সেবা
✔ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার আধুনিক কৌশল
রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা
সরকার সিভিক কর্মীদের জন্য একটি নতুন নির্দেশিকা (Guideline) চালু করতে চলেছে। এতে বেতন কাঠামো, কাজের শর্তাবলী এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য থাকবে।
একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন,
“সিভিক ভলান্টিয়াররা পুলিশের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই তাঁদের সুযোগ-সুবিধার দিকেও আমাদের নজর দিতে হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের (Election Strategy) আগে সরকারের একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে।
সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রতিক্রিয়া
এই খবর সামনে আসতেই সিভিক কর্মীদের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে তাঁদের ভবিষ্যৎ অনেকটাই সুরক্ষিত হবে।
একজন সিভিক কর্মী বললেন,
“এতদিন ধরে আমরা শুধু আশার কথা শুনেছি, কিন্তু এবার যদি সত্যিই কিছু হয়, তাহলে আমাদের জীবন অনেক বদলে যাবে।”
রাজ্য সরকার যদি সত্যিই সিভিক ভলান্টিয়ারদের বেতন বৃদ্ধি, চাকরির স্থায়ীকরণ এবং স্বাস্থ্যবিমা চালু করে, তাহলে এটি তাঁদের জন্য একটি বড় সুখবর হবে। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো পূরণ হতে চলেছে। এখন শুধু ফেব্রুয়ারি মাসের বাজেটের দিকে নজর রাখতে হবে। যদি বাজেটে এই সুবিধাগুলো ঘোষণা করা হয়, তাহলে সিভিক কর্মীদের জীবনযাত্রার মান অনেকটাই উন্নত হবে।
এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র সিভিক কর্মীদের জন্য নয়, বরং রাজ্যের সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এখন দেখার বিষয়, সরকার কতটা দ্রুত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারে। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তত্থ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন। তথ্যসূত্র: আজকাল বাংলা।