ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অগ্রগতির আহ্বান।

Written by Bikrom Das

Published on:

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, কোভিড-১৯ মহামারির পূর্ববর্তী স্তরে ম্যালেরিয়ার মৃত্যুহার ফিরে এসেছে। এটি একদিকে আশাব্যঞ্জক খবর হলেও, সংস্থাটি মনে করে যে, ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। ম্যালেরিয়া এখনও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যার একটি প্রধান কারণ, এবং ২০২২ সালে এই রোগে প্রায় ৫,৯৭,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

২০২৩ সালে, বিশ্বজুড়ে ম্যালেরিয়ার ২৬৩ মিলিয়ন কেস রিপোর্ট করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ মিলিয়ন বেশি। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে যে বিঘ্ন ঘটেছিল, তার প্রভাব এখনও রয়ে গেছে। তবে ভালো খবর হলো, মৃত্যুহারের দিক থেকে আমরা মহামারির আগের অবস্থানে ফিরে এসেছি। WHO-এর গ্লোবাল ম্যালেরিয়া প্রোগ্রামের আরনল্ড লে মেনাচ এই বিষয়ে বলেছেন যে, মহামারির সময় ম্যালেরিয়া মৃত্যুহারে যে বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছিল, সেটি এখন ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে।

ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অগ্রগতির আহ্বান।

ম্যালেরিয়ার সবচেয়ে বড় বোঝা বহন করছে আফ্রিকা। ২০২৩ সালে আফ্রিকায় মৃত্যুহার ছিল প্রতি ১০০,০০০ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের মধ্যে ৫২.৪ জন। এটি এখনও WHO-এর ২০৩০ সালের লক্ষ্য থেকে দ্বিগুণেরও বেশি। আফ্রিকার দেশগুলিতে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। WHO-এর মতে, এই অঞ্চলে আরও বিনিয়োগ এবং কার্যকর পরিকল্পনা প্রয়োজন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ভ্যাকসিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে দুটি ভ্যাকসিন, RTS,S এবং R21/Matrix-M, ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলি বিশেষত আফ্রিকায় ম্যালেরিয়ার বোঝা কমাতে সাহায্য করছে। RTS,S ভ্যাকসিন ২০১৯ সালে মালাওয়ি, কেনিয়া এবং ঘানায় প্রথম চালু করা হয়। WHO জানিয়েছে, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ এই তিনটি দেশে প্রায় ২০ লাখ শিশুকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।

ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন দল প্রধান মেরি হ্যামেল জানিয়েছেন যে, এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রোগ্রামে মৃত্যুহার ১৩ শতাংশ কমেছে। WHO আশা করছে যে, অন্যান্য দেশগুলিতেও এই ভ্যাকসিন চালু হলে একই ধরনের অগ্রগতি দেখা যাবে। বর্তমানে সাব-সাহারান আফ্রিকার ১৭টি দেশ তাদের নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে এই ভ্যাকসিন যুক্ত করেছে। এছাড়া আরও আটটি দেশ GAVI (গ্লোবাল ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স) থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য অনুদান পেয়েছে।

ডুয়াল-ইনসেকটিসাইড মশার জাল

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে আরেকটি বড় উন্নয়ন হলো ডুয়াল-ইনসেকটিসাইড মশার জালের ব্যবহার। এই জালগুলিতে পিরোল ইনসেকটিসাইড এবং প্রচলিত পিরেথ্রয়েড ইনসেকটিসাইডের সংমিশ্রণ রয়েছে, যা মশার মাধ্যমে ম্যালেরিয়ার বিস্তার রোধে উল্লেখযোগ্য সুরক্ষা প্রদান করেছে। WHO-এর হিসাব অনুযায়ী, এই ধরনের জাল গত তিন বছরে প্রায় ১৩ মিলিয়ন ম্যালেরিয়া কেস এবং ২৫,০০০ এরও বেশি মৃত্যু প্রতিরোধ করতে সাহায্য করেছে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই এখনও বেশ কঠিন। WHO উল্লেখ করেছে যে, অর্থনৈতিক অপ্রতুলতা, ভ্যাকসিনের সীমিত সরবরাহ এবং জলবায়ু পরিবর্তন ম্যালেরিয়া প্রতিরোধকে বাধাগ্রস্ত করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মশা বাহিত রোগের বিস্তার আরও বাড়ছে। WHO-এর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম ঘেব্রেইসুস বলেছেন, “উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে আরও বেশি বিনিয়োগ এবং কার্যকরী পদক্ষেপ প্রয়োজন।”

গ্লোবাল ফান্ড, যা এইডস, টিউবারকিউলসিস এবং ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য গঠিত একটি অংশীদারিত্ব, জানিয়েছে যে, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অগ্রগতি থেমে আছে। গ্লোবাল ফান্ডের নির্বাহী পরিচালক পিটার স্যান্ডস বলেছেন, “আমাদের একটি দ্বৈত পন্থায় কাজ করতে হবে। নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করতে হবে এবং একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব স্বাস্থ্যসেবার উপর কমাতে হবে।”

ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে ত্বরান্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন

WHO মনে করে যে, ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গতি বাড়ানো প্রয়োজন। উন্নত প্রযুক্তি, ভ্যাকসিনের বিস্তৃত ব্যবহার এবং কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এই লড়াইয়ে সহায়ক হতে পারে। ম্যালেরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি এবং এর বিরুদ্ধে বৈশ্বিক উদ্যোগ ভবিষ্যতে এই রোগ মোকাবিলায় কার্যকর সমাধান প্রদান করতে পারে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে কিছু অগ্রগতি অর্জিত হলেও এখনও অনেক পথ বাকি। WHO এবং অন্যান্য অংশীদার সংগঠনগুলো এই রোগ প্রতিরোধে নতুন প্রযুক্তি এবং ভ্যাকসিনের ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে এই প্রচেষ্টায় আরও সমন্বিত এবং ত্বরান্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে জয়ী হতে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি।

DISCLAIMER

এই আর্টিকেলে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বিশ্বস্ত মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য যে আমরা সমস্ত নির্ভুল তথ্য দিয়েছি। কোনো প্রতিক্রিয়া বা অভিযোগের জন্য [email protected] মেইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপJoin Us
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলJoin Us
আমাদের ফেসবুক পেজFollow Us
আমাদের কোরা পেজFollow Us
গু নিউজে ফলো করুনFollow Us

Bikrom Das

আমি বহু-বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছি। আমি বাজার দর, রোজগার, অটোমোবাইল, টেলিকম, টেকনোলজি, জীবনধারা, ধর্ম এবং জাতি নিয়ে গভীর অন্তর্দৃষ্টি নিয়ে লেখালেখি করে থাকি। আমার লেখাগুলো তথ্যবহুল, পাঠকের কাছে সহজবোধ্য এবং সমসাময়িক। Mymensingh, Bangladesh. Whatsupbd.com-এ আমার আর্টিকেলগুলো পাঠকদের সঠিক তথ্য সরবরাহ করার পাশাপাশি জীবনের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় দিকগুলোতে আলোকপাত করে। নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি এবং বাজার বিশ্লেষণে আমার লেখা পঠনযোগ্যতা বাড়ায়। আমার (Bikrom Das) লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি পাঠকগোষ্ঠী তৈরি করা, যারা আমার তথ্যসমৃদ্ধ ও নির্ভুল কনটেন্ট থেকে উপকৃত হবে।