তামিলনাড়ুর নমাক্কল শহরে অবস্থিত নমাক্কল আঞ্জানেয়ার মন্দির (Namakkal Anjaneyar Temple), হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি অত্যন্ত পবিত্র মন্দির। এটি বিশেষভাবে পরিচিত আঞ্জানেয়ার বা হনুমান দেবতার বিশাল মূর্তির জন্য, যা প্রায় ১৮ ফুট উঁচু এবং একক পাথর থেকে খোদাই করা হয়েছে। এই মন্দিরের আধ্যাত্মিক গুরুত্বও অনেক বেশি, কারণ এটি হনুমান দেবতার বিশেষ রূপে পূজিত হয়। এই নিবন্ধে, আমরা মন্দিরের ইতিহাস, সময়সূচি, এবং কিছু সাধারণ প্রশ্নোত্তর তুলে ধরব যাতে দর্শনার্থীরা মন্দির সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেতে পারেন।
নমাক্কল আঞ্জানেয়ার মন্দিরের ইতিহাস নমাক্কল আঞ্জানেয়ার মন্দিরের ইতিহাস বেশ পুরোনো এবং এটি কয়েক শতাব্দী আগে নির্মিত হয়েছিল। ধারণা করা হয় যে, এটি চোল সাম্রাজ্যের শাসনকালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মন্দিরে অবস্থিত হনুমান দেবতার মূর্তি প্রায় ১৮ ফুট উঁচু এবং একক পাথর থেকে খোদাই করা। এটি দেশের অন্যতম বৃহত্তম হনুমান মূর্তিগুলির একটি। স্থানীয় কিংবদন্তি অনুযায়ী, মন্দিরটি সেই স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেখানে হনুমান দেবতা লঙ্কায় সীতা দেবীকে উদ্ধার করতে যাওয়ার সময় বিশ্রাম নিয়েছিলেন। এই মন্দিরটি বর্তমানে এক গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থল, যেখানে ভক্তরা হনুমান দেবতার আশীর্বাদ ও শক্তি লাভের জন্য আগমন করেন।
সূচিপত্র
Namakkal Anjaneyar Temple Timings
মন্দিরের সময়সূচি নমাক্কল আঞ্জানেয়ার মন্দিরটি সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ভক্তদের জন্য খোলা থাকে। মন্দিরের সময়সূচি নিম্নরূপ:
- সকালের দর্শন: সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা
- বিকেলের বিরতি: দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা
- সন্ধ্যায় দর্শন: বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা
বিশেষ উৎসব ও অনুষ্ঠান উপলক্ষে মন্দিরের সময়সূচি পরিবর্তিত হতে পারে, তাই মন্দির কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সময়সূচি যাচাই করা উত্তম।
হনুমান এবং লক্ষ্মী দেবী সম্পর্কিত এক কিংবদন্তি কথিত আছে, নেপালের কাণ্ডাকি নদীতে স্নানরত অবস্থায় হনুমান দেবতা একটি পাথর দেখতে পান, যা বিষ্ণুর পাথরের মতো মনে হয়। এ সময় তিনি লক্ষ্মী দেবীকে ধ্যান করতে দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করেন। দেবী জানান যে, তিনি এই স্থানে হিরণ্যকশ্যপকে হত্যা করার পর তপস্যা করতে এসেছিলেন। হনুমান দেবতা পানিতে স্নান করতে চাইলেন, তবে তিনি যে শালগ্রাম পাথরটি ধারণ করেছিলেন, তা স্থলে রাখার অনুমতি ছিল না। দেবী লক্ষ্মী তাকে সতর্ক করে দেন, যে তিনি যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফিরে না আসেন, তবে পাথরটি স্থলে রাখা হবে। পরে, হনুমান ফিরে এসে দেখতে পান যে, পাথরটি স্থলে রাখা হয়েছে এবং এটি একটি পর্বত হয়ে গিয়েছে।
নমাক্কল আঞ্জানেয়ার মন্দির
এ কারণে, বিশ্বাস করা হয় যে, হনুমান দেবতাকে তার মূর্তিতে নার্সিমহা স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আঁকা হয়েছে, যার মন্দির নমাক্কল থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এছাড়াও, মন্দিরের কাছে একটি পাহাড় রয়েছে, যা মনে করা হয় হনুমান নেপাল থেকে নিয়ে এসেছিলেন, এবং এটি রক ফোর্ট বা নমাক্কল ফোর্ট নামে পরিচিত।
উৎসব এবং অনুষ্ঠান নমাক্কল আঞ্জানেয়ার মন্দিরটি বিভিন্ন হিন্দু ধর্মীয় উৎসবের জন্য পরিচিত, যেখানে বিশেষ পূজা ও আচার অনুষ্ঠিত হয়। এখানে কিছু প্রধান উৎসবের কথা উল্লেখ করা হলো:
- হনুমান জয়ন্তী: এই উৎসবটি হনুমান দেবতার জন্মদিন হিসেবে পালিত হয় এবং বিশেষ উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে পূজা হয়। ভক্তরা বড় সংখ্যায় মন্দিরে উপস্থিত হয়ে বিশেষ আচার অনুষ্ঠান পালন করেন।
- রম নবমী: রাম চন্দ্রের জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হওয়া এই উৎসবটিও এক গুরুত্বপূর্ণ দিন, কারণ হনুমান দেবতা রামের এক অনুগত ভক্ত ছিলেন। এই দিনে মন্দিরে বিশেষ পূজা ও রামকথা পাঠ করা হয়।
- নবরাত্রি: এই নয় রাতব্যাপী উৎসবের সময় মন্দিরে বিশেষ পূজা ও আচার অনুষ্ঠিত হয়, যা অনেক দর্শনার্থীকে আকৃষ্ট করে।
সংক্ষিপ্ত FAQ (প্রশ্নোত্তর)
-
নমাক্কল আঞ্জানেয়ার মন্দিরের প্রধান আকর্ষণ কী?
-
মন্দিরে কোন সময়ে দর্শন করতে যেতে হবে?
মন্দির সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা, এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে, উৎসবের সময় সময়সূচি পরিবর্তিত হতে পারে।
-
নমাক্কল আঞ্জানেয়ার মন্দিরে কোন উৎসবগুলো সবচেয়ে বড়?
নমাক্কল আঞ্জানেয়ার মন্দির একটি ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এর বিশাল হনুমান মূর্তি, আধ্যাত্মিক ইতিহাস, এবং বিভিন্ন উৎসব ভক্তদের কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। যারা মন্দিরে যান, তাদের জন্য এটি এক দারুণ অভিজ্ঞতা হতে পারে, যা তাদের আত্মিক শক্তি এবং শান্তি প্রদান করবে।
DISCLAIMER
এই আর্টিকেলে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বিশ্বস্ত মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য যে আমরা সমস্ত নির্ভুল তথ্য দিয়েছি। কোনো প্রতিক্রিয়া বা অভিযোগের জন্য [email protected] মেইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।