কর্মব্যস্ত সপ্তাহ শেষে সাধারণ মানুষ একটু বেশি কেনাকাটা করেন। তাই আজকের বাজার দর তালিকা নিয়েও আগ্রহ থাকে বেশি। চলমান সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ে জনমনে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে। কারণ দিন দিন বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চরম আকার ধারণ করেছে। টিসিবি (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) বাজার দর নির্ধারণ করে থাকে। তবে বাজারে যেভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে, তাতে সাধারণ মানুষ একপ্রকার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। পিয়াজ, তেল, মাছ, মাংস, শাক-সবজি, চিনি সবকিছুরই দাম ক্রমাগত বাড়ছে। ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। আজকের নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশের বর্তমান বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
সূচিপত্র
আজকের চালের দাম ২০২৪
চালের দাম | চালের দাম |
চিকন চাল (নাজির/মিনিকেট) | ৬৪-৮০ টাকা |
মাঝারী চাল (পাইজাম/লতা) | ৫৫-৬০ টাকা |
মোটা চাল (স্বর্ণা/চায়না/ইরি) | ৫২-৫৫ টাকা |
আটা ও ময়দার দাম ২০২৪
আটা ও ময়দার দাম | মূল্য (প্রতি কেজি) |
খোলা সাদা আটার দাম | ৩৮-৪৫ টাকা |
প্যাকেট আটার দাম | ৫০-৬৫ টাকা |
খোলা ময়দার দাম | ৫৫-৬০ টাকা |
প্যাকেট ময়দার দাম | ৬৫-৭৫ টাকা |
তেলের দাম ২০২৪
তেলের দাম | মূল্য (প্রতি লিটার) |
সয়াবিন তেল (খোলা) | ১৪৮-১৫৮ টাকা |
সয়াবিন তেল (বোতল) | ১৬৫-১৬৭ টাকা |
রাইস ব্রান তেল (বোতল) | ১৮০-১৯০ টাকা |
পাম অয়েল (লুজ) | ১৩০-১৩৫ টাকা |
সরিষার তেল (বোতল) | ৩৬০ টাকা |
মাছ ও মাংসের দাম
মাছ ও মাংসের দাম | মূল্য (প্রতি কেজি) |
দেশী মুরগি | ৫২০-৬০০ টাকা |
বয়লার মুরগি | ১৬০-১৭০ টাকা |
খাসির মাংস | ৯৫০-১১০০ টাকা |
রুই মাছ | ২৮০-৫০০ টাকা |
ইলিশ মাছ | ৬০০-১৭০০ টাকা |
আজকের সবজির দাম
আজকের সবজির দাম | মূল্য (প্রতি কেজি) |
আলু | ৫০-৫৫ টাকা |
কাঁচা মরিচ | ২২০-৩৭০ টাকা |
বেগুন | ৬০-৮০ টাকা |
লেবু (মাঝারি) | ২৫ টাকা (প্রতিটি) |
গাজর | ৮০-১২০ টাকা |
শশা | ৫০-৬০ টাকা |
মুলা | ১০-২০ টাকা (হালি) |
আজকের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য তালিকা
আজকের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য তালিকা | মূল্য (প্রতি কেজি বা লিটার) |
দেশি পেঁয়াজের দাম | ১১০-১১৫ টাকা |
আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম | ৮০-১০০ টাকা |
রসুন (দেশী) | ২০০-২২০ টাকা |
শুকনা মরিচ (দেশী) | ৩২০-৪৫০ টাকা |
হলুদ (দেশী) | ৩৫০-৪০০ টাকা |
আদা (দেশী) | ৪৫০-৫০০ টাকা |
লবন (আয়োডিনযুক্ত) | ৩০-৪২ টাকা |
চিনির দাম | ১৩০-১৩৫ টাকা |
জিরা | ৭০০-৮০০ টাকা |
ধনে | ২২০-২৬০ টাকা |
তেজপাতা | ১৫০-২০০ টাকা |
ডিমের দাম (ফার্ম) | ৫০-৫৬ টাকা |
ডালের দাম (মসুর ডাল) | ১৩৫-১৯০ টাকা |
গুড়া দুধ (প্যাকেট জাত) | ৭৬০-৮৬০ টাকা |
ছোলা বা চানার দাম | ৮৫-৯০ টাকা |
আজকে পিয়াজের দাম কত
পিয়াজ রান্নার জন্য অতি প্রয়োজনীয়। প্রায় প্রতিদিনই পিয়াজের দর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দেশি পিয়াজ ১১০-১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে আমদানিকৃত পিয়াজের দাম ৮০-১০০ টাকা। পিয়াজের দাম কমানোর জন্য সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও বাজারে তার প্রভাব বিশেষ দেখা যাচ্ছে না। সরবরাহ ব্যবস্থার অসুবিধা এবং পিয়াজের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে দাম বাড়ছে বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
সয়াবিন তেলের দাম
ভোজ্য তেল হিসেবে সয়াবিন তেল রান্নায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। ২০২০ সালের দিকে সয়াবিন তেলের দাম ছিল অনেক কম। কিন্তু ক্রমান্বয়ে এর দাম বেড়েছে। বর্তমানে বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৫-১৬৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেল ১৪৫-১৫২ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, আর ৫ কেজি বোতলজাত সয়াবিন তেল ৭৮০-৮১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ বেশ সমস্যায় পড়েছে।
আজকে বয়লার মুরগির দাম
মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য বয়লার মুরগি মাংসের অন্যতম সাশ্রয়ী উৎস। কিছুদিন আগে বয়লার মুরগির দাম ২০০-২১০ টাকা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এর দাম বেড়ে ৩০০ টাকায় পৌঁছে যায়। তবে বর্তমানে দাম কিছুটা কমেছে। এখন বাজারে বয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। মুরগির দাম নিয়ে ভোক্তারা বেশ উদ্বিগ্ন, কারণ প্রায় প্রতিদিনই মুরগির দাম ওঠানামা করছে।
আজকের চিনির দাম কত
চিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। চা বা মিষ্টি তৈরিতে চিনি অপরিহার্য। চিনির দাম গত কয়েক বছরে অনেকটাই বেড়ে গেছে। একসময় যে চিনি ৫৫-৬০ টাকায় পাওয়া যেত, বর্তমানে সেই চিনি ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনির দাম বৃদ্ধির ফলে ভোক্তাদের দৈনন্দিন খরচ বেড়ে যাচ্ছে, যা তাদের আর্থিক চাপ বাড়াচ্ছে।
ছোলা বা চানা
ছোলা বা চানা বিশেষ করে রমজান মাসে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এই মাসে বাজারে এর চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। তবে এবছর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা বাজারে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। বর্তমানে ছোলা বা চানা ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোলার দাম নিয়েও সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে, কারণ দাম বেড়ে গেলে রমজানের বিশেষ খাদ্য তালিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চালের দাম
বাংলাদেশের খাদ্য তালিকায় চাল প্রধান খাদ্য। বাজারে বিভিন্ন ধরনের চাল পাওয়া যায়, এবং এর দামও ভিন্ন ভিন্ন। মোটা চাল (স্বর্ণা/চায়না/ইরি) ৫২-৫৫ টাকায় এবং চিকন চাল (নাজির/মিনিকেট) ৬৪-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের দামও সময়ে সময়ে ওঠানামা করে। বিশেষ করে নতুন ফসলের মৌসুমে চালের দাম কমে, কিন্তু তার পরের মৌসুমে দাম বেড়ে যায়।
অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য
বাজারে পিয়াজ, রসুন, সরিষার তেল, আলু, পটল, তরকারি, গরুর মাংস, বয়লার মুরগী, ছোলা, চানা, ফুল কপি ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়মিত ওঠানামা করে। সাধারণ মানুষ বাজারে যাওয়ার আগে এই দ্রব্যগুলোর দাম সম্পর্কে একটা ধারণা নিতে চায়। আজকের বাজার দর নিয়ে আমাদের এই আলোচনা সেই উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে। বাজারে দ্রব্যমূল্য ক্রমাগতভাবে ওঠানামা করছে, এবং এই তালিকা ভোক্তাদেরকে বাজারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেবে।
FAQs – প্রতিদিনের বাজার দরের প্রশ্নত্তোর
আজকের বাজার দর কিভাবে জানব?
আপনি অনলাইনে whatsupbd পোর্টাল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, এবং বাজার সংক্রান্ত অ্যাপসের মাধ্যমে আজকের বাজার দর জানতে পারবেন। এছাড়াও, স্থানীয় বাজারে গিয়ে দোকানদারদের কাছ থেকে সরাসরি তথ্য নিতে পারেন।
কেন বাজার দর প্রতিদিন পরিবর্তন হয়?
বাজার দর বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন পরিবর্তন হয়। এর মধ্যে রয়েছে:উৎপাদন খরচ
চাহিদা ও সরবরাহ
পরিবহন খরচ
মৌসুমি পরিবর্তন
আন্তর্জাতিক বাজার।
কোন পণ্যের দাম সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন হয়?
সাধারণত তাজা ফল, শাকসবজি, মাছ, মাংস এবং দুধের দাম সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন হয়। কারণ এগুলোর উৎপাদন এবং সরবরাহ মৌসুমি এবং আবহাওয়ার উপর নির্ভরশীল।
আজকের সোনার দাম কত?
সোনার দাম জানতে আপনি জুয়েলারি শোরুম, ব্যাংক বা অনলাইন গোল্ড রেট চেকিং ওয়েবসাইটে দেখতে পারেন।
কিভাবে বাজার দরের উঠানামা আমার ব্যয় ব্যবস্থাপনায় প্রভাব ফেলে?
বাজার দরের উঠানামা আপনার মাসিক খরচকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই বাজার দরের উপর নজর রাখা এবং কেনাকাটা করার আগে তুলনা করা জরুরি।
সমাপ্তী
বাংলাদেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বর্তমানে সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো দ্রব্যের দাম বাড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বাজারে তার প্রভাব সীমিত। ভবিষ্যতে দ্রব্যমূল্য কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নিয়ে সরকারকে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম না কমালে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়বে।
এই প্রবন্ধটি মধ্যম স্তরের লেখকের দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা হয়েছে, এবং এখানে সহজ ভাষায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পাঠকরা আশা করি, বর্তমান বাজারের অবস্থা সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবেন এবং নিজেদের কেনাকাটা পরিকল্পনা সঠিকভাবে করতে পারবেন।
DISCLAIMER
এই আর্টিকেলে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বিশ্বস্ত মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য যে আমরা সমস্ত নির্ভুল তথ্য দিয়েছি। কোনো প্রতিক্রিয়া বা অভিযোগের জন্য [email protected] মেইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।